২০২২ সালে সবচেয়ে বেশিবার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এমন পাঁচটি দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। এ সময় বাংলাদেশে ছয়বার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার ঘটনা ঘটেছে। নিউইয়র্কভিত্তিক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অধিকার নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান অ্যাকসেস নাউয়ের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত মঙ্গলবার অ্যাকসেস নাউ ‘নিয়ন্ত্রণের অস্ত্র, দায়মুক্তির ঢাল’ শিরোনামে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, পরীক্ষা, নির্বাচন, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ বিভিন্ন জাতীয় পর্যায়ের বড় কোনো ইস্যুতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। অনেক দেশের সরকার ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার পথ বেছে নিয়েছে।
অ্যাকসেস নাউ ২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে। সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর ৩৫টি দেশে ১৮৭ বার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বার (৮৪ বার) ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভারতে। তালিকায় এরপর আছে ইউক্রেন (২২ বার), ইরান (১৮ বার), মিয়ানমার (৭ বার) ও বাংলাদেশ (৬ বার)।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ দমনের জন্য সবচেয়ে বেশিবার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে, এমন ১৪টি দেশে ৪৮ বার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের ঘটনা ঘটে। এ তালিকায় বাংলাদেশের নামও আছে। এ ছাড়া বিক্ষোভ দমনের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ করা দেশের তালিকায়ও বাংলাদেশের নাম আছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ইন্টারনেট বন্ধের কারণ যা-ই হোক না কেন, তা মানুষের মৌলিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন করে।
বাংলাদেশের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কারণেও যদি সরকার এক বছরে ছয়বার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে থাকে, তাহলেও সংখ্যাটা কমিয়ে আনতে হবে। কারণ, ইন্টারনেট এখন জরুরি একটি পরিষেবা। এর সঙ্গে অর্থনীতি, শিক্ষার মতো বিষয় জড়িত।