দেশে ‘ধর্ষকতোষণ চর্চা’ বন্ধ হোক 

বাংলাদেশে নারী ও শিশু ধর্ষণের অপরাধে শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রভাবশালী হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্থানীয় মোড়লেরা সালিসি বৈঠকে আপস করে দেন। স্থানীয় প্রশাসনও জোরালো পদক্ষেপ নেয় না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত নারী–শিশুরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন। 

দেশের প্রায় প্রাচীনতম নারী সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ধর্ষণের শিকার মেয়েশিশু ও নারীর সঙ্গে ধর্ষকের বিয়ে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেত্রীরা এই আহ্বান জানিয়েছিলেন। দেরিতে হলেও এই আহ্বানের জন্য তাঁদের সাধুবাদ জানাতে হয়। 

বাংলাদেশে অনেক দিন থেকেই সমাজপতিদের প্রত্যক্ষ প্রচেষ্টায় ধর্ষকের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত কিশোরী–নারীকে ধরেবেঁধে বিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ চলে আসছে। সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষার কারবারে এখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেশের ভরসাস্থল হিসেবে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরাও এমন দীক্ষা নিচ্ছেন, চর্চা করছেন। ঠিক করে দিচ্ছেন, কখন কোথায় কীভাবে কত টাকা দেনমোহরে এসব অসহ্য বা অসইলে ‘বিয়ে’ হবে।

২০২২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে খোদ আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আইনে ধর্ষণের অপরাধ আপসযোগ্য নয়।’ কিন্তু আপস চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত নারী বা অপ্রাপ্তবয়স্করা যেন নিতান্তই পাপোশ। ২০২০ সালের নভেম্বরে ফেনী জেলা কারাগারে ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে অভিযুক্ত ধর্ষকের বিয়ে দেওয়া হয়।

এমনই আরেকটি ঘটনা ঘটে আদালত চত্বরে। সেটি ছিল উত্তরের জনপদ নাটোরে, যেখানে একসময় রানি ভবানীর রাজত্ব ছিল। ছিল ধর্ষকের মুণ্ডুপাতের আইন। রানি ভবানী জনদরদি শাসক হলেও ধর্ষণের অপরাধ ছিল ক্ষমার অযোগ্য। আজকালের ভাষায় নো কম্প্রোমাইজ বা সদ্য সম্প্রতি জাতিসংঘ যাকে বলছে ‘নো এক্সকিউজ’ বা কোনো অজুহাত নয়। 

দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার চর্চায় আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে।

গত ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ শুরু হয়। এই পক্ষ পালন উপলক্ষে নতুন করে আবার নারী ও মেয়েশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের জোর ডাক দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে, নারী ও মেয়েশিশুর প্রতি সহিংস আচরণ এবং তাঁর কথিত বিচার–আচারপ্রক্রিয়া দিন দিন ঝুলে যাচ্ছে। আমাদের উদাসীনতা আর অপরাধীতোষণ যেভাবে আমাদের মজ্জায় অর্থাৎ হার্ডডিস্কে ঢুকে গেছে, তাতে শুধু কথায় চিড়া ভিজবে না। সমস্যাটা মগজে। তাই মগজধোলাইয়ের কাজ ও সময়ে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কড়ি না ফেললে তাল মাখবে না কেউ। জাতিসংঘের বার্তাটা সব সদস্যরাষ্ট্রের কাছে পৌঁছে দিতে এবারের মূল প্রতিপাদ্য করেছিল ‘ইনভেস্ট টু প্রিভেন্ট ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন অ্যান্ড গার্লস (নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বিনিয়োগ)।’

বলাবাহুল্য, এবারও অনুবাদ করতে গিয়ে ‘গার্লস’কে যথারীতি কন্যা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেয়েশিশুকে কন্যার নিকাব পরানোর সঙ্গে সঙ্গে যে তার অধিকারের সুতাটা ‘বুজদিল’ অভিভাবকদের নাটাইয়ে বন্দী হয়ে যায়, সেটা কি আমাদের বোধে আসে না? নাকি এসব ইচ্ছাকৃত। সে যা–ই হোক, আমরা যারা শুধু শুনতে ভালো লাগা অথবা শক্ত বানানের কারণে যুগের পর যুগ অশ্বত্থগাছকে বটগাছ বলে চালিয়ে দিই, তাদের পক্ষে কন্যা আর মেয়ের পার্থক্য করা কঠিন বৈকি। 

■ সালিসে ক্ষতিগ্রস্ত নারী–শিশুকে ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে আপস করা হয়।

■ ক্ষতিগ্রস্তের নামে জমি লিখে দিয়েও আপস করতে দেখা যায়।

■ দেশের বিদ্যমান বিচারব্যবস্থায় ধর্ষকের বিচার করতে হবে।

■ নারী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে আরও বেশি সোচ্চার হতে হবে। 

তবে ‘গার্লস’কে ডটার বানালেও অনুবাদের ফাঁদে ‘ইনভেস্টমেন্ট’ শব্দটি মূলধনে হারিয়ে যায়নি। সেটাকে যথাযথভাবে বিনিয়োগই বলা হয়েছে। বাংলা অনুবাদে প্রতিপাদ্য হয় এমন,‘নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধে এগিয়ে আসুন, সহিংসতা প্রতিরোধে বিনিয়োগ করুন।’ তবে এই বিনিয়োগ শুধু অর্থের লগ্নি নয়, এটা সময়ের বিনিয়োগ মানে মনোযোগের সঙ্গে যথেষ্ট সময় দেওয়া। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘কোয়ালিটি টাইম’। যৌক্তিক চিন্তার বিনিয়োগ ঘটাতে হবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায়। কীভাবে নির্যাতনকারী বা ধর্ষককে রেহাই দেওয়া যায়, সেই বদচিন্তার বদলে ভাবতে হবে কীভাবে নির্যাতিত মেয়ে এবং নারীকে ন্যায্য সাহায্য দেওয়া যায়।

মনে পড়ে, কোভিডের আগে ২০১৯ সালের মে–জুনে প্রায় সব জাতীয় দৈনিকে ‘ধর্ষকের সঙ্গে বিবাহ’ নিয়ে হরদম লেখালেখি চলত। এ সময় কথিত বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে আলেমদের মতামত ছাপা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে সিলেটের শীর্ষস্থানীয় মুফতি ও শহরের কাজীরবাজার মাদ্রাসার জ্যেষ্ঠ মুহাদ্দিস শফিকুর রহমানের বক্তব্য শুনলে মনে হবে, তিনি বিষয়টির পেছনে সময় বিনিয়োগ করছেন। ন্যায্যতা, নৈতিকতা আর নারীর মর্যাদাকে তিনি সর্বোচ্চ আগ্রাধিকার দিয়ে ধর্ষক ও ক্ষতিগ্রস্ত নারীর বিয়ে প্রক্রিয়াকে একটু ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। 

শফিকুর রহমানের ভাষায়, ধর্ষক-ক্ষতিগ্রস্ত নারীর সম্মতি থাকলে বিয়েটা হয়ে যাবে। কিন্তু তাঁদের দাম্পত্যজীবন নিয়ে ভাবনার ব্যাপার আছে। সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে গ্রাম্য সালিস (কখনো আদালত) বিয়ে দিলেও তাঁদের মনের বন্ধন তৈরি না হলে সে বিয়ে মেয়ের জন্য আশীর্বাদের বদলে আরও অভিশাপ হয়ে দাঁড়াবে। একজন ধর্ষক জালিম, যে জোরজবরদস্তি করে একদা তাকে ভোগ করেছে। সেই জালিমকে ওই মেয়েটি কীভাবে নিজের স্বামী ও জীবনসঙ্গী হিসেবে মন থেকে মেনে নেবে, তা আমাদের ভাবতে হবে। এ ক্ষেত্রে মাতবরেরা মাতবরি না করে ধর্ষককে সরাসরি আইনের হাতে তুলে দিয়ে প্রচলিত আইনে তার যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হওয়াই যুক্তিযুক্ত। 

দুঃখের বিষয়, দেশের একজন আলেম কত সহজে ধর্ষকের সঙ্গে বিয়েতে নারীর অসম্মান ও সর্বনাশ দেখতে পান। আর আমাদের আইন–আদালতের মালিকেরা অন্য কিছু দেখেন। অথচ দেশে ধর্ষণের মতো অপরাধের আইন আছে। দেশের বিদ্যমান আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে নিয়ে কাজ করেছেন, এমন একজন আইনজীবী জানালেন, ধর্ষক, তার অভিভাবক ও আইনজীবী বিয়েটাকে আদালতে জামিনের একটা অসিলা হিসেবে ব্যবহার করে। বিচারকেরা বিয়ে হয়ে গেছে দেখলে জামিন দিয়ে দেন। যদিও কাগজে–কলমে আছে, ধর্ষণ মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। বিয়ে হলেও আদালত থেকে মামলা নিষ্পত্তি হতে হবে। কিন্তু পরে এসব মামলা আর এগোয় না। বাদীরও মামলা চালানোর ইচ্ছা থাকে না। ফলে ওই মামলা কখনোই আলোর মুখ দেখে না। একসময় খারিজ হয়ে যায়।

২০১৯ সালের অক্টোবরে লালমনিরহাটে ধর্ষণের শিকার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে অভিযুক্ত ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগে কাজিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছিল, কিশোরীর পরিবার মনে করে, ওই বিয়ের ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাইনুল ইসলাম জড়িত ছিলেন। তবে বিয়ের কোনো দালিলিক প্রমাণ রাখা হয়নি। ধর্ষক পরে কিশোরীকে তালাকও দিয়ে দেন। 

জমির বিনিময়ে ধর্ষকের জামিন

২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাঙামাটির লংগদু উপজেলার করল্যাছড়িতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এক স্কুলছাত্রী ছাগল খুঁজতে গেলে আর এস উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুর রহিম তাকে ধর্ষণ করেন। সে সময় স্কুলের ছাত্রাবাসে কেউ ছিল না। বিষয়টি কাউকে না জানাতে স্কুলছাত্রীকে হুমকি দেন ওই শিক্ষক। ঘটনার ৯ দিন পর ৫ অক্টোবর ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর পরিবার লংগদু থানায় মামলা করে। ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর আবদুর রহিমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেন রাঙামাটির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ ই এম ইসমাইল হোসেন। একই সঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আবদুর রহিম। পাশাপাশি জামিন আবেদন করেন। গত বছরের ৮ জুলাই ক্ষতিগ্রস্ত মেয়েশিশুটিকে এক একর জমি লিখে দেওয়ার শর্তে আবদুর রহিমকে (৪৬) তিন মাসের জামিন দেন আদালত। সঙ্গে ছিল বিয়ে করার শর্ত। অন্য ধর্ম ও নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর মেয়েশিশুকে ধর্ষণের পর বিয়ে কতটা ন্যায্য এবং শিশুর অধিকার সংবেদনশীল প্রস্তাব, তা ভেবে দেখার অবকাশ আছে। 

একইভাবে লালমনিরহাটের রাকিবুজ্জামান ৩ বিঘা জমি লিখে দেওয়ার পর নাবালিকা অপহরণ মামলায় গত বছরের ১২ ডিসেম্বর জামিন পায়। এখানেও শর্ত বিয়ে। জেল সুপারের উপস্থিতিতে কারাগারে বিয়ের কাবিন হয়। 

আদালতে না পাঠিয়ে স্রেফ চড়–থাপ্পড় আর জরিমানা করে ধর্ষকদের রেহাই দেওয়া হচ্ছে। 

গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের এক কৃষকের মেয়ে (স্কুলছাত্রী) ২০২১ সালে ধর্ষণের শিকার হয়। গ্রামের সমাজপতিরা জানিয়ে দেন, তাঁদের বিচার মেনে নিতে। থানায় অভিযোগ করলে গ্রামে থাকতে দেওয়া হবে না। পরে ওই বছরের ১৬ জুন সালিস বৈঠক করে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তিন থাপ্পড় ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রীর স্বজনেরা জানান, ধর্ষক ও তাঁর স্বজনেরা গ্রামে প্রভাবশালী হওয়ায় এমন বিচার মেনে নিতে হয়েছে তাঁদের। 

শেষ কথা 

এবারের ২৫ নভেম্বরের প্রতিপাদ্যের (নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে এগিয়ে আসুন, সহিংসতা প্রতিরোধে বিনিয়োগ করুন’ (ভুল অনুবাদ) পাশাপাশি মুখ্য স্লোগান ছিল ‘নো এক্সকিউজ’ বা কোনো অজুহাত নয়। বলা বাহুল্য, আমাদের অধিকার সংগঠনগুলো এ বিষয়ে যথেষ্ট সোচ্চার নয়। আমাদের আরও সোচ্চার হতে হবে। দেখা যাক পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ধর্ষণের কী বিচার হচ্ছে। 

ভারত: প্রতিবেশী ভারতে ২০১৩ সালে ধর্ষণের শাস্তি আগের চেয়ে কঠোর করা হয়েছে। দেশটিতে বিশেষ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। সচরাচর ৭ থেকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

 চীন: চীনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় ধর্ষকের পুরুষাঙ্গ কেটে দেওয়া হয়। 

ইরান: ইরানে সাধারণত ধর্ষককে জনসমক্ষে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ধর্ষণের শিকার নারীর অনুমতি নিয়ে ধর্ষককে জনসমক্ষে ১০০ দোররা (চাবুক) মারা অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গ্রিস: গ্রিসে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এই শাস্তি কার্যকর করা হয় আগুনে পুড়িয়ে। 

মিসর: মিসরে জনাকীর্ণ এলাকায় জনসমক্ষে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। 

উত্তর কোরিয়া: ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। ধর্ষককে ফায়ারিং স্কোয়াডে নিয়ে মাথায় গুলি করে এই শাস্তি কার্যকর করা হয়। 

আফগানিস্তান: ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আদালত রায় ঘোষণার চার দিনের মধ্যে ধর্ষকের মাথায় গুলি করে এই রায় কার্যকর করা হয়। 

সৌদি আরব: ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। জনসমক্ষে ধর্ষকের শিরশ্ছেদ করে সাজা কার্যকর করা হয়। 

সংযুক্ত আরব আমিরাত: যৌন নির্যাতন বা ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদণ্ড। রায়ের সাত দিনের মধ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে সাজা কার্যকর করা হয়। 

ফ্রান্স: ক্ষতিগ্রস্তের ক্ষতি কতটা গুরুতর, তার ওপর নির্ভর করে সাজা। সাজা ৩০ বছরের কারাদণ্ড থেকে আমৃত্যু কারাদণ্ড। 

নেদারল্যান্ডস: ৪ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যেকোনো ধরনের যৌন নিপীড়ন, অনুমতি ছাড়া জোরপূর্বক চুম্বনও এ ধরনের অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।

রাশিয়া: বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর রাষ্ট্র রাশিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি ৩ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড। 

যুক্তরাষ্ট্র: বিশ্বের শীর্ষ শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে অঙ্গরাজ্য ও ফেডারেল আইন—এমন দুই ধরনের আইন রয়েছে। ফেডারেল আইনে সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে অঙ্গরাজ্য আইনে একেক অঙ্গরাজ্যে একেক রকম শাস্তি। 

নরওয়ে: ধর্ষকের সাজা ৪ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড। 

ইসরায়েল: ধর্ষণের শাস্তি ৪ থেকে সর্বোচ্চ ১৬ বছরের কারাদণ্ড। 

মঙ্গোলিয়া: ধর্ষণের শিকার নারীর পরিবারের হাত দিয়ে ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। 

আমাদের দেশে বিধান কি ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ের মধ্যেই ঘুরপাক খাবে? 


গওহার নঈম ওয়ারা লেখক ও গবেষক

nayeem5508@gmail.com