মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের একটি টিউব অক্টোবরের শেষে বা নভেম্বরের প্রথম দিকে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। অন্য টিউব ডিসেম্বরে চালু হবে।
শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই কথা বলেন খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। চট্টগ্রাম বিভাগের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘অক্টোবরের শেষে কিংবা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আমরা একটা টানেল খুলে দেব। আর ডিসেম্বরের শেষে আমরা আরেকটা টানেল খুলে দেব। এরপর টানেল ওপেন (চালু) হয়ে যাবে। প্রেসের সঙ্গে আমি আরও পাঁচ–ছয়বার টানেল নিয়ে বসেছি। এই প্রকল্প খুব স্মুথলি ইমপ্লিমেন্টেড হয়েছে।’
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এত বড় একটা প্রকল্প, একেবারে যথাসময়ে বাস্তবায়িত হয়েছে। এটা আমাদের জন্য বড় অ্যাচিভমেন্ট (অর্জন)। আমরা চট্টগ্রামের মানুষের সঙ্গে বসেছি। এপারের ওপারের রাজনীতিবিদদের সঙ্গে বসেছি। তাঁরা আমাদের সহায়তা করেছেন। এটি বাংলাদেশের জন্য একটা মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এত বড় প্রকল্প সময়মতো হলো।’
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেলের কাজ ইতিমধ্যে ৮৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের একটি প্রান্ত শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা প্রান্তে। আর শেষ হয়েছে আনোয়ারা প্রান্তে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদীর তলদেশে প্রথম টানেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছিলেন। মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে টানেলের প্রতিটি টিউব বা সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। দুই সুড়ঙ্গে দুটি করে মোট চারটি লেন থাকবে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরতায় সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতার। মূল টানেলের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক থাকবে। আর আনোয়ারা প্রান্তে রয়েছে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ উড়ালসেতু। টানেল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা।
এখন পর্যন্ত টানেলের প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৭ শতাংশ। মেয়াদ রয়েছে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত। এর মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।