ইলিশ রক্ষা অভিযান

জাজিরায় মাঝ পদ্মায় ইউএনওর ওপর হামলা, ১০ জেলের কারাদণ্ড

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পাইনপাড়া এলাকায় গেলে জেলেরা আভিযানিক টিমের ওপর হামলা করেন
ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাজিরায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযান চলাকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসানের নেতৃত্বাধীন টিমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছোড়ে নৌপুলিশ। পরে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা-পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাজিরার পাইনপাড়া এলাকার মাঝ পদ্মায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় আটক ১০ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ইউএনও কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আমরা সারা দিন পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে মা ইলিশ সংরক্ষণে অভিযান চালাই। এতে জেলেরা আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হন। রাতে পদ্মা নদীর মাঝের দিকে গেলে তাঁরা ট্রলার নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালান। তখন আত্মরক্ষার্থে নয় রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।

জাজিরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, শনিবার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল বাশার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জামাল হোসাইন ও মাঝিরঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে পদ্মা নদীতে অভিযানে নামেন ইউএনও কামরুল হাসান।

এ সময় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ শিকার করায় ১১ জেলেকে আটক করা হয়। তখন তাঁদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অর্থদণ্ড করা হয়। 

এরপর ইউএনও কামরুল হাসানের নেতৃত্বে ওই টিম সন্ধ্যার দিকে মাঝ পদ্মায় অভিযানে যান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে পাইনপাড়া এলাকায় গেলে জেলেরা ওই টিমের ওপর হামলা করেন। তাঁদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। দেশীয় অস্ত্র টেঁটা ও সুরকিও ছোড়েন জেলেরা।

একপর্যায়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নৌপুলিশ নয় রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে খবর পেয়ে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা-পুলিশ ওই চর থেকে তাঁদের উদ্ধার করে মাঝিরঘাটে নিয়ে আসে।

এ সময় একটি ট্রলার ও দুই লাখ মিটার জাল জব্দ ও ১০ জেলেকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন— দ্বীন ইসলাম (৪২), শানোয়ার (২০), রিয়াদ (২২), আক্কাস মালত (৪০), মোক্তার মিয়া (২০), রাজিব মিয়া (২৮), শাকিল (১৯), মনির হোসেন (২৬), সুজাত ফকির (২০) ও বাবুল ফকির (৪০)। তাঁদের মধ্যে নয়জনকে এক মাসের ও একজনকে দুই মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল বাশার বলেন, এখন ইলিশের প্রজনন মৌসুম। এ সময় মা ইলিশ মিঠা পানিতে ডিম দেয়। এ কারণে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে ২৮ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চালাবে সরকার। অভিযান চলাকালীন সময় ইলিশ শিকার, বিপণন, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ।

তিনি বলেন, এ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কিছু জেলে নদীতে ইলিশ শিকার করছিলেন। ইউএনওর নেতৃত্বে আমরা জাজিরায় পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাই। পাইনপাড়া এলাকায় রাতে আমাদের ওপর হামলা করেন জেলেরা।

মাঝিরঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) জহিরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, হামলার ঘটনায় ১০ জনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের কারাদণ্ড দিয়েছেন। আজ রোববার তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।