উপরে বাঁ থেকে জি এম কাদের, শেরীফা কাদের, মুজিবুল হক; নিচে বাঁ থেকে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও এ কে এম সেলিম ওসমান
উপরে বাঁ থেকে জি এম কাদের, শেরীফা কাদের, মুজিবুল হক; নিচে বাঁ থেকে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও এ কে এম সেলিম ওসমান

জি এম কাদের, আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা আসামি

ছয় বছর আগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার অভিযোগে ৬৫ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে। আসামির তালিকায় জাতীয় পার্টি ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও রয়েছেন। গত শুক্রবার রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করা হয়।

মামলার বাদী বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান মো. বাবুল সরদার চাখারী। বাদীপক্ষের আইনজীবী জহির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় গত ৩১ অক্টোবর আদালতে নালিশি মামলা হয়। আদালত মামলার অভিযোগ এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।

বাবুল সরদার চাখারী মামলার আরজিতে বলেন, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সকালে খালেদা জিয়া পুরান ঢাকার বকশীবাজারে অবস্থিত আদালতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গুলশানের বাসা থেকে রওনা দেন। এ সময় তিনিও (বাদী) ওই গাড়িবহরের সঙ্গে ছিলেন। গাড়িবহরটি মগবাজারে পৌঁছালে জি এম কাদেরসহ অন্য আসামিদের হুকুমে হামলা হয়। বহরের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

মামলায় বলা হয়, মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতা দেব কুন্ডু, সিরাজুল হক ও কুদ্দুস খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেন। অজ্ঞাতনামা আসামিরা গাড়ি ভাঙচুর করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। সিএনজিচালিত তিন–চারটি অটোরিকশা, একটি মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেট কারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিএনপির কর্মীদের ওপরও হামলা হয়। সে সময় এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে আসামিরা ১৪ দলের প্রভাবশালী নেতা–কর্মী হওয়ায় তখন অভিযোগ গ্রহণ করা হয়নি।

মামলার আসামি যাঁরা

মামলার আসামিদের মধ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ছাড়াও তাঁর স্ত্রী শেরীফা কাদের, কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক (চুন্নু), সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার রয়েছেন। দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্যের ১২ জনও রয়েছেন আসামিদের তালিকায়। তাঁরা হলেন এ কে এম সেলিম ওসমান, খায়রুল ইসলাম, আহসান আবদুর রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, লিয়াকত হোসেন, আতিকুর রহমান, সোলায়মান আলম, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, রাজা আমিন ও এটিইউ তাজ রহমান।

এ ছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান শেখ সালু, দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহামুদুল হক আক্কাস, আনিচুর রহমান, এনপিপি ন্যাশনাল পার্টির সাবেক মহাসচিব আবদুল হাই মণ্ডল, ইসলামী ঐক্যজোটের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন এবং বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার রয়েছেন। শমসের মবিন চৌধুরী বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন। আর তৈমুর আলম খন্দকার বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ছিলেন। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাজাহান ওমরকে আসামি করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার সময় মুহাম্মদ ইবরাহিমের দল ২০–দলীয় জোটের সদস্য ছিল। অন্যদিকে শাজাহান ওমর ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুহাম্মদ ইবরাহিম ও শাজাহান ওমর নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য হন।