চাকরির নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তথ্য ও সম্প্রচারসচিব মো. মকবুল হোসেনকে ‘বাধ্যতামূলক’ অবসরে পাঠানোর অন্তর্নিহিত কারণ জানেন না তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
আজ সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অন্তর্নিহিত কারণ কি, সেটা জানি না। অন্তর্নিহিত কারণ বলতে পারবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা অতীতেও ঘটেছে।’
গতকাল রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ধারা ৪৫ অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে সচিব মকবুল হোসেনকে অবসর প্রদান করা হলো।
ধারাটিতে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারীর চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর যেকোনো সময় সরকার জনস্বার্থে প্রয়োজন মনে করলে কারণ দর্শানো ছাড়াই তাঁকে চাকরি থেকে অবসর দিতে পারবে। তবে যে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিতে হবে।
আইনে এমন কথা বলা থাকলেও ঠিক কী কারণে সচিবের মতো একজন শীর্ষ পদের কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলো, তা নিয়ে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে নানা আলোচনা-গুনজন চলছে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের কেউ কিছু বলতে পারছেন না।
মকবুল হোসেনের চাকরির মেয়াদ আরও বছরখানেক ছিল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কে এম আলী আজমের সইয়ে জারি প্রজ্ঞাপনে মকবুল হোসেনকে অবসরে পাঠানোর কথা জানানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্যেষ্ঠ সচিব কে এম আলী আজম প্রথম আলোকে বলেন, বিধান আছে চাকরি ২৫ বছর পূর্ণ হলে কেউ নিজে স্বেচ্ছায় অবসরে যেতে পারেন। আবার সরকার ইচ্ছা করলেও কাউকে অবসর দিতে পারে। বিধিবিধান মেনেই মকবুল হোসেনকে অবসর দেওয়া হয়েছে। এর বেশি তাঁর পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়।
মকবুল হোসেন গতকালও অফিস করেছেন। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তিনি অবসরের জন্য আবেদন করেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরাও কিছু জানেন না।
মকবুল হোসেন ২০২১ সালের ৩১ মে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে সচিব পদে যোগ দেন। এই পদে যোগ দেওয়ার আগে তিনি যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরে রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের দশম ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন মকবুল হোসেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী।