তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় বাস করেন বাংলাদেশি হাফিজ মুহাম্মদ। ভূমিকম্পে তুরস্কের যে শহরগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার মধ্যে আঙ্কারা নেই। তবে হাফিজ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা উদ্বেগে রয়েছেন। কারণ, ভূমিকম্পের পর আফটার শক (পরাঘাত) হচ্ছে। আবার বড় ধরনের ভূমিকম্প হয় কি না, সেই আতঙ্কে রয়েছেন সবাই।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে কথা হয় হাফিজের সঙ্গে, তুরস্কে তখন সকাল। হাফিজ উচ্চতর পড়াশোনার জন্য ২০১৯ সালের শেষ দিকে তুরস্কে যান। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভূমিকম্পের বিভিন্ন তথ্য দিচ্ছেন।
হাফিজ জানান, ছয় মাস ধরে স্ত্রী ফারজানা আক্তার তাঁর সঙ্গে আছেন। তিনি (ফারজানা) খুব ভয় পেয়েছেন। বাংলাদেশে তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর পরিবারের সদস্যরাও আতঙ্কে আছেন। সব মিলিয়ে ভয়াবহ মানসিক দুরবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
আঙ্কারায় কয়েক দিন ধরে তুষারপাত হচ্ছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি খুব খারাপ। হাফিজ বলেন, অন্যান্য বছর তুষারপাত হয় ডিসেম্বর মাসে। এবার হচ্ছে ফেব্রুয়ারিতে। আজও তুষারপাত হয়েছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায় ভূমিকম্পে যেসব শহর বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। দেশটিতে শিক্ষার্থীসহ অন্যদের উদ্ধারকাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
হাফিজ আরও বলেন, ভূমিকম্পের পর তুরস্কের কাহরামানমারাস সুতচু ইমাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী গোলাম সাইদের (রিংকু) খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি যে ভবনটিতে বাস করতেন, সেটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছেই ছিল ভবনটি। ওই ভবনে থাকা আরেক বাংলাদেশি নূরে আলম বের হতে পেরেছিলেন।
তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে গতকাল সোমবার ৭ দশমিক ৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এদিন তুরস্কের স্থানীয় সময় ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে। ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৪ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
হাফিজ বলেন, দেশটিতে সূর্যের দেখা মেলে আটটার দিকে। গতকাল ভোর সোয়া চারটার দিকে তাঁর ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। ভূমিকম্পের জন্যই হয়তো ঘুম ভেঙেছিল। তারপর তো ভয়াবহ অবস্থার কথা জানতে পারেন। দেশটির ভূমিকম্প–বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভূমিকম্পের পরাঘাত ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত হতে পারে। এখন পর্যন্ত ২৩০টির বেশি পরাঘাত হয়ে গেছে।