ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর তিন দিন পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় এখনো থমথমে। নিরাপত্তার কারণে সচিবালয়ে ঢোকার তিনটি ফটকের মধ্যে দুটিই বন্ধ ছিল আজ বৃহস্পতিবার। একটি ফটক দিয়ে সচিবালয়ে যাতায়াত করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ঘুরে দেখা যায়, কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছিল কম। বেলা দুইটার দিকে দেখা যায়, যে কয়েকজন এসেছিলেন, তাঁরাও সবাই অফিস ছেড়ে বাসায় চলে যাচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, তিন দিন ধরে দেশে কোনো সরকার না থাকায় সবার মধ্যে একটা গা ছাড়া ভাব ছিল। কারও কোনো জবাবদিহি নেই। যে যার মতো করে অফিসে এসেছেন, কেউ আসেননি। তবে আগামী রোববার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করেন তিনি।
সচিবালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কারা হচ্ছেন উপদেষ্টা, তা নিয়ে তাঁদের আগ্রহ রয়েছে। কে কোন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পাবেন, তাঁরা কেমন করবেন, এসব বিষয় ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
সরকার পতনের পর থেকে উত্তপ্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গতকাল বুধবারও পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তারা নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান দিয়েছেন। বিভিন্ন ব্যাচের পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের তালিকা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব, তাদের পদোন্নতি দিতে নতুন সরকারের কাছে আহ্বান জানান তাঁরা।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখা গেল, কার্যালয়ে আছেন সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান। তবে এদিন অফিস করেননি জনপ্রশাসনসচিব মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। নতুন অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে কাজ করতে আজ সারা দিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব বঙ্গভবনে ছিলেন বলে জানা গেছে।
তবে অন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ স্থবির থাকলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যাঁরা পদোন্নতিবঞ্চিত ছিলেন, তাঁরাই মূলত এসেছেন। আর যাঁরা গত সরকারে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন, তাঁরা অফিস করছেন না।