ফুটবল টো ট্যাপে (বুটের ডগা দিয়ে ফুটবলে টোকা দেওয়া) বিশ্ব রেকর্ড করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাগীব শাহরিয়ার। মিনিটে সবচেয়ে বেশি ২২০ বার টো ট্যাপের নৈপুণ্য দেখিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। গত পরশু রাগীব এ স্বীকৃতির সনদ হাতে পেয়েছেন।
রাগীব শাহরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে সংযুক্ত তিনি।
ফুটবল টো ট্যাপে প্রথম বিশ্ব রেকর্ড ছিল মিনিটে ১৭০ বার। এর পরের রেকর্ডগুলো ছিল যথাক্রমে ১৯৮, ২০৬, ২০৮ ও ২১২ বারের। রাগীবের বিশ্ব রেকর্ডের বিষয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, মিনিটে সর্বোচ্চ ফুটবল টো ট্যাপ এখন ২২০। গত ২০ ফেব্রুয়ারি এ নৈপুণ্য অর্জন করেন বাংলাদেশের রাগীব শাহরিয়ার। এর আগের রেকর্ডটি ছিল ২১২ বার।
রেকর্ড গড়ার প্রক্রিয়াটা জটিল ছিল বলে জানান রাগীব শাহরিয়ার। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘এই স্বীকৃতির জন্য আমি গত বছরের ৫ অক্টোবর গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের কাছে আবেদন করি। নভেম্বরের শেষ দিকে তারা মেইল করে জানায় যে আমার আবেদনটি গ্রহণ করা হয়েছে। এখন তাদের গাইডলাইন অনুযায়ী তথ্যপ্রমাণ অনলাইনে জমা দিতে হবে।’
রাগীব বলেন, ‘গাইডলাইন অনুযায়ী আমি অনুশীলন শুরু করি। যখন দেখলাম, বারবারই ২১২ বার অতিক্রম করে ফেলছি, তখন গত ২০ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত প্রচেষ্টা নিই। প্রমাণ হিসেবে টো ট্যাপের ভিডিও, পুরো প্রক্রিয়ার ভিডিও, ফুটবলে পা স্পর্শ করার ক্লোজ ভিডিও এবং সবকিছু মেলানোর একটা স্লো মোশন ভিডিও দিতে বলা হয়েছিল। এ ছাড়া বলা হয়েছিল তিন পাতার ফটোগ্রাফিক তথ্যপ্রমাণ দিতে। পাশাপাশি রেকর্ড শুরু, রেকর্ড করার সময় এবং রেকর্ড শেষে উদ্যাপনের ছবি দিতে বলা হয়।’
রেকর্ড করার সময় পাশে অপরিচিত দুজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী রাখতে বলা হয়েছিল বলে জানান রাগীব। বলেন, ‘স্টপওয়াচ ধরে সময় দেখতে দুজন টাইমকিপার রাখতে বলা হয়েছিল। দুজন টাইমকিপার, দুজন সাক্ষী, দুজন ভিডিওগ্রাফার ও একজন ফটোগ্রাফার—মোট সাতজন ছিলেন আমার রেকর্ডে। তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে গিনেসের ওয়েবসাইটে আমার আইডিতে ঢুকে কভার পেজ, টাইমকিপারের স্টেটমেন্ট, উইটনেস স্টেটমেন্টসহ যাবতীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পূরণ করে জমা দিয়েছেন।’
২০ ফেব্রুয়ারি এটি (চূড়ান্ত টো ট্যাপ) করার পর ২৯ মে গিনেস কর্তৃপক্ষ আমাকে একটা মেইল করে। ৪ এপ্রিল আরেকটি মেইলে আমাকে রেকর্ড করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।—রাগীব শাহরিয়ার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
রাগীব বলেন, ‘২০ ফেব্রুয়ারি এটি (চূড়ান্ত টো ট্যাপ) করার পর ২৯ মে গিনেস কর্তৃপক্ষ আমাকে একটা মেইল করে। ৪ এপ্রিল আরেকটি মেইলে আমাকে রেকর্ড করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। আমাকে বলা হয়, আপনি চাইলে সনদের জন্য অর্ডার করতে পারেন। পরে আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আমাকে সনদটি পাঠানো হয়। ১ জুলাই আমি সনদটি হাতে পাই।’
ফুটবল টো ট্যাপে প্রথম বিশ্ব রেকর্ড ছিল মিনিটে ১৭০ বার। এর পরের রেকর্ডগুলো ছিল যথাক্রমে ১৯৮, ২০৬, ২০৮ ও ২১২ বারের। রাগীবের রেকর্ডের বিষয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, মিনিটে সর্বোচ্চ ফুটবল টো ট্যাপ এখন ২২০।
অনন্য কিছু করার ইচ্ছা থেকেই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আবেদন করার ব্যাপারটি মাথায় এসেছিল বলে জানান রাগীব শাহরিয়ার। বলেন, ‘যখন মাথায় আসে, তখন থেকেই আমি চিন্তা করি যে ফুটবলে কিছু করতে পারলে ভালো হবে। এর পর থেকেই টো ট্যাপ প্র্যাকটিস শুরু করে দিই।’