সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষা এবং সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার মানোন্নয়ন, মান সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়েছিল বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল। আইনেও এই উদ্দেশ্যের কথা বলা আছে। কিন্তু সরকারি এই সংস্থাকে কখনো সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি; বরং তারা এমনভাবে নিজেদের আইন সংশোধন করার প্রস্তাব তৈরি করেছে, যেটাকে সাংবাদিকেরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের উদ্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
প্রেস কাউন্সিল একটি আধা বিচারিক সংস্থা। সংবাদপত্রের নীতিনৈতিকতা পরিপন্থী কোনো সংবাদ প্রকাশের জন্য সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট পত্রিকার সম্পাদক ও প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে কাউন্সিলে অভিযোগ করতে পারেন। আইনে এই সংস্থাকে এ ধরনের অভিযোগ বিচার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সম্পাদক ও প্রতিবেদককে সতর্ক করতে পারে, ভর্ৎসনা করতে পারে প্রেস কাউন্সিল। তবে বাস্তবে প্রেস কাউন্সিলে খুব বেশি অভিযোগ জমা পড়ে না। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে প্রেস কাউন্সিলে মামলা হয়েছে ছয়টি।
নিজেদের প্রধান দুটি কাজের কোনোটিতেই সেভাবে নেই প্রেস কাউন্সিল। অথচ এই সংস্থার পেছনে বছরে দুই কোটি টাকার বেশি অনুদান দিতে হয় সরকারকে।
সর্বশেষ ২০২১ সালের অক্টোবরে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমকে তিন বছরের জন্য প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৯ সেপ্টেম্বর তাঁর চুক্তি বাতিল করা হয়। নতুন কাউকে এখন পর্যন্ত চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়নি। অবশ্য ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকেই প্রেস কাউন্সিল স্থবির হয়ে আছে। কারণ, চেয়ারম্যান বাদে কাউন্সিলের অন্য সদস্য পদগুলো তখন থেকেই শূন্য।
যেভাবে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়, সেটাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেন সাংবাদিকেরা। তাঁরা বলেছিলেন, এই আইন পাস হলে প্রেস কাউন্সিল রক্ষকের জায়গায় ‘ভক্ষক’ হয়ে দাঁড়াবে।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) গত ৩ মে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচক প্রকাশ করে। সেখানে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান হয় ১৬৩তম। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের বড় অবনমন ঘটেছিল ২০২২ সালে। ২০২১ সালের তুলনায় ওই বছর সূচকে বাংলাদেশের ১০ ধাপ অবনমন হয়েছিল।
অন্যদিকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আইন ও সালিশ কেন্দ্রের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বছরের প্রথম ৯ মাসে দেশে ১৭৯ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, মামলার শিকার এবং পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হামলার শিকার হন অন্তত ৬৬ জন সংবাদকর্মী। দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন একজন সাংবাদিক।
এখন দেখা যাক ২০২২ সালে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কী করেছিল। ২০২২ সালে ৮টি বৈঠক করেছিল প্রেস কাউন্সিল। বৈঠকগুলোর কার্যবিবরণী ঘেঁটে দেখা যায়, কোনো বৈঠকেই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বা সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। বছরজুড়ে তারা মূলত ব্যস্ত ছিল নানা দিবসভিত্তিক অনুষ্ঠান আয়োজনের আলোচনা নিয়ে।
এর বাইরে তারা ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় মোট ২২টি সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা করে। এগুলোর মূল বিষয় ছিল ‘সাংবাদিকতার নীতিমালা ও নৈতিকতা, প্রেস কাউন্সিল আইন ও আচরণবিধি এবং তথ্য অধিকার আইন অবহিতকরণ’। সংবাদপত্রের মানোন্নয়নেও তাদের তেমন কোনো কর্মসূচি ছিল না।
প্রেস কাউন্সিল সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের চিত্রও ছিল প্রায় একই। এ ছাড়া ২০২২ সালের প্রথম বৈঠকে সংবাদপত্রের সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও নিরসন কমিটি করেছিল প্রেস কাউন্সিল। কিন্তু গত দুই বছরে ১৩ সদস্যের এই কমিটির কোনো কার্যক্রম ছিল না। সাংবাদিকদের একটি ডিজিটাল ডেটাবেজ তৈরির কাজ শুরু করেছিল কাউন্সিল। ৩৩টি জেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে সেটিও আলোর মুখ দেখেনি।
মূলত এই দুটি বিধান নিয়ে প্রবল আপত্তি আছে। কারণ ‘রাষ্ট্রীয় ও জনস্বার্থ ক্ষুণ্ন হওয়া’ এই শব্দগুলো অস্পষ্ট। এগুলোকে নিজেদের সুবিধামতো ব্যাখ্যা করার সুযোগ থাকে এবং সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখানো, ভিন্নমত দমনের কাজে ইচ্ছামতো ব্যবহার করার সুযোগ থাকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২২ সালে প্রেস কাউন্সিল ৮টি বৈঠক করে। বৈঠকে উপস্থিত সদস্যদের প্রতি বৈঠকের জন্য ৩ হাজার টাকা করে সম্মানী দেওয়া হয়।
২০২২ সালের ২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত কাউন্সিলের প্রথম বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ছিল: কাউন্সিলের বিভিন্ন কমিটি গঠন, আপিল বোর্ডের সদস্য মনোনয়ন, রাষ্ট্রপতি ও তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নবগঠিত কাউন্সিলের সৌজন্য সাক্ষাৎ আয়োজন, বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, প্রেস কাউন্সিল পদক নীতিমালা পর্যালোচনা ও প্রেস কাউন্সিল পদকের আবেদন আহ্বান, প্রেস কাউন্সিল পদকের জন্য জুরিবোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্য মনোনয়ন, প্রেস কাউন্সিল দিবস উদ্যাপন প্রস্তুতি, কাউন্সিলের পেশকারের শূন্য পদে নিয়োগ এবং নতুন পদ সৃজনের প্রস্তাব পর্যালোচনা।
কাউন্সিলের দ্বিতীয় বৈঠকের আলোচ্যসূচি ছিল: প্রেস কাউন্সিল দিবস উদ্যাপনের প্রস্তুতি পর্যালোচনা, প্রেস কাউন্সিল পদক প্রদান অনুষ্ঠানের তারিখ পর্যালোচনা এবং নতুন পদ সৃজনের প্রস্তাব অনুমোদন।
তৃতীয় সভার আলোচ্য বিষয় ছিল: প্রেস কাউন্সিলের নতুন দুজন সদস্যকে অভ্যর্থনা, সাংবাদিকদের ডেটাবেইস প্রণয়ন নীতিমালা পর্যালোচনা, প্রেস কাউন্সিল পদকের জন্য মনোনয়ন পর্যালোচনা এবং পদক প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন পর্যালোচনা।
চতুর্থ বৈঠকের আলোচ্যসূচি ছিল: প্রেস কাউন্সিল পদক প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন পর্যালোচনা, একটি মামলার রায় অনুমোদন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেনশন–সংক্রান্ত সমস্যা ও নতুন পদ সৃজনের প্রস্তাব সংশোধন।
নিজেদের প্রধান দুটি কাজের কোনোটিতেই সেভাবে নেই প্রেস কাউন্সিল। অথচ এই সংস্থার পেছনে বছরে দুই কোটি টাকার বেশি অনুদান দিতে হয় সরকারকে।
পঞ্চম সভার আলোচনার বিষয় ছিল: প্রেস কাউন্সিল পদক প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজনের অগ্রগতি পর্যালোচনা, জুডিশিয়াল কমিটির সুপারিশ করা মামলার রায় অনুমোদন ও আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর স্মরণে আলোচনা সভা আয়োজনের অগ্রগতি পর্যালোচনা।
ষষ্ঠ সভার আলোচনার বিষয় ছিল: জাতীয় শোক দিবস উদ্যাপন ও শোকের মাসের কর্মসূচির নির্ধারণ, একটি মামলার রায় অনুমোদন ও স্মরণসভার আয়োজন।
সপ্তম সভার আলোচনার বিষয় ছিল: প্রেস কাউন্সিল পদক প্রদান অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি পর্যালোচনা ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের বার্ষিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন।
অষ্টম সভার আলোচনার বিষয় ছিল: মামলার রায় অনুমোদন, প্রেস কাউন্সিল পদক-২০২৩ এর জুরিবোর্ডের সভাপতি ও সদস্য মনোনয়ন, সাংবাদিক ডেটাবেজ তৈরির অগ্রগতি পর্যালোচনা, কাউন্সিলের সদস্যদের সম্মানী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেনশন নিয়ে অর্থ বিভাগের আপত্তির বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার তারিখ নির্ধারণ এবং কর্মচারীদের সরকারি ছুটির দিনে ডিউটির জন্য অতিরিক্ত কাজের ভাতা চূড়ান্তকরণ।
২০২৩ সালে প্রাতিষ্ঠানিক ক্যাটাগরিতে প্রেস কাউন্সিল পদক পায় ভোরের কাগজ। আঞ্চলিক প্রাতিষ্ঠানিক সম্মাননা পেয়েছে দৈনিক কক্সবাজার।
সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষা, মানোন্নয়ন ও মান সংরক্ষণসহ যেসব উদ্দেশ্যে প্রেস কাউন্সিল গঠন করা হয়েছিল, সেটা অর্জনে কোনো কার্যক্রম ছিল কি না, সে বিষয়ে কাউন্সিল–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো কিছু জানাতে পারেনি। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রেস কাউন্সিলের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
১৯৭৪ সালে প্রেস কাউন্সিল আইন করা হয়েছিল। আর সংস্থাটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ১৯৭৯ সাল থেকে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ২০২২ সালের ২০ জুন আইনের সংশোধনীর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
যেভাবে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়, সেটাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেন সাংবাদিকেরা। তাঁরা বলেছিলেন, এই আইন পাস হলে প্রেস কাউন্সিল রক্ষকের জায়গায় ‘ভক্ষক’ হয়ে দাঁড়াবে।
ওই সংশোধনী প্রস্তাবে সাংবাদিকদের সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান সংযোজনের কথা বলা হয়। এ ছাড়া নতুন একটি ধারা যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়, যেখানে বলা হয়, সংবাদপত্র (প্রিন্ট ও অনলাইন), সংবাদ সংস্থায় ‘রাষ্ট্রীয় ও জনস্বার্থ’ ক্ষুণ্ন হয় এমন সংবাদ/প্রতিবেদন প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে কাউন্সিল স্বপ্রণোদিত হয়ে সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্র বা সংবাদ সংস্থা সম্পর্কে তদন্ত পরিচালনা, সমন জারি এবং প্রয়োজনে আদেশ দিতে পারবে।
মূলত এই দুটি বিধান নিয়ে প্রবল আপত্তি আছে। কারণ ‘রাষ্ট্রীয় ও জনস্বার্থ ক্ষুণ্ন হওয়া’ এই শব্দগুলো অস্পষ্ট। এগুলোকে নিজেদের সুবিধামতো ব্যাখ্যা করার সুযোগ থাকে এবং সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখানো, ভিন্নমত দমনের কাজে ইচ্ছামতো ব্যবহার করার সুযোগ থাকে।
পরে মন্ত্রিসভা জরিমানার বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত দেয়। এই সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে তখন অংশীজন বা সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। কারা, কীভাবে এই খসড়া করেছিলেন, তা নিয়েও ছিল লুকোচুরি। অবশ্য এখন পর্যন্ত ওই সংশোধনী পাস হয়নি।
তবে ২০২২ সালের ২০ জুন দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেস কাউন্সিলের তৎকালীন চেয়ারম্যান নিজামুল হক নাসিম বলেছিলেন, এই সংশোধনীর খসড়া তৈরির উদ্যোগ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। তবে তাঁদের কমিটিতেও এটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রেস কাউন্সিল এটাতে সম্মতি দিয়েছে।
প্রেস কাউন্সিল আইন অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতি বা বিচারপতি হওয়ার যোগ্য ব্যক্তি হবেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। ১৪ সদস্যের মধ্যে সদস্য হিসেবে থাকেন তিনজন কর্মরত সাংবাদিক, সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার তিনজন সম্পাদক, সংবাদপত্রের মালিকপক্ষের তিনজন, বাংলা একাডেমির একজন প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের একজন প্রতিনিধি, বার কাউন্সিলের একজন প্রতিনিধি এবং স্পিকার মনোনীত জাতীয় সংসদের দুজন সদস্য। তবে বেশির ভাগ সময় প্রেস কাউন্সিল গঠন করা হয়েছিল দলীয় বিবেচনায়।
সর্বশেষ কাউন্সিলে সদস্য হিসেবে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান ও শফিউল ইসলাম, দৈনিক প্রভাত–এর সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোজাফফর হোসেন, দ্য ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, যুগান্তর–এর সম্পাদক সাইফুল আলম, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহাম্মদ নুরুল হুদা, ভোরের কাগজ–এর সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বার কাউন্সিলের সদস্য মোখলেছুর রহমান, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, দৈনিক জাতীয় অর্থনীতির সম্পাদক এমজি কিবরিয়া চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ফেরদৌস জামান এবং বিএফইউজের নির্বাহী কমিটির সদস্য উৎপল কুমার সরকার ও দপ্তর সম্পাদক সেবীকা রাণী।
সংবাদপত্র-সংক্রান্ত আইন বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাফরুল হাসান শরীফের মতে, প্রেস কাউন্সিলের মূল কাজ হওয়া উচিত ছিল হলুদ সাংবাদিকতা বন্ধ করা। পাশাপাশি সাংবাদিকদের কাজের মানোন্নয়ন করা, তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু সেই জায়গায় প্রেস কাউন্সিলকে অনেক বছর ধরে মানুষ পায়নি। তাঁর মতে, প্রেস কাউন্সিলের আইন সংশোধনের চেষ্টার মাধ্যমে গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধের চেষ্টা করা হয়েছে। সেই সংশোধনীগুলোকে পুনর্বিবেচনা করে প্রেস কাউন্সিল যে উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছিল, তা বাস্তবায়নে কার্যক্রম শুরুর এখন উপযুক্ত সময়।
নোয়াবের প্রতিবাদ
২৫ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় নেই প্রেস কাউন্সিল’ শিরোনামের প্রতিবেদনের একটি অংশের প্রতিবাদ পাঠিয়েছে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।
২৯ অক্টোবর সংগঠনটির সভাপতি এ কে আজাদ স্বাক্ষরিত প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বেশির ভাগ সময় প্রেস কাউন্সিল গঠন করা হয়েছিল দলীয় বিবেচনায়।’ প্রতিবেদনে সর্বশেষ প্রেস কাউন্সিলের সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে ছিলেন নোয়াবের নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।
প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে প্রেস কাউন্সিল বিধি অনুযায়ী সদস্য হিসেবে নোয়াবের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি চাওয়া হয়েছিল। নোয়াবের পর্ষদ তাদের প্রতিনিধি হিসেবে দেওয়ান হানিফ মাহমুদকে মনোনীত করে।