দেশে বর্তমানে ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি। এসব যানবাহনের মধ্যে ৭০ শতাংশ রাস্তায় চলাচল করছে, যা দেশের পরিবহনব্যবস্থার নিরাপত্তায় বড় সংকট তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার।
২২ অক্টোবর পালিত হবে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস। এ দিবস সামনে রেখে মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিআরটিএ চেয়ারম্যান এ কথা জানান।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ৫ লাখ যানবাহনের মধ্যে ৩০ শতাংশ রাস্তায় চলাচল করে না। বাকি ৭০ শতাংশ দেশের পরিবহনব্যবস্থার নিরাপত্তায় বড় সংকট তৈরি করছে। তারা ফিটনেসবিহীন যানবাহন রাস্তায় পেলে জব্দ করে ডাম্পিংয়ে পাঠাচ্ছেন।
প্রতিদিন দেশে ১২ থেকে ১৫ জন সড়কে মারা যাচ্ছেন জানিয়ে নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ‘এমনকি আমরাও নিরাপদ নই। আমাদের সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং তা করতে হলে আমাদের সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। পরিবহনমালিক থেকে শ্রমিক ও সড়ক ব্যবহারকারী—সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলতে হবে। তা না হলে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।’
বিআরটিএ চেয়ারম্যান জানান, শুধু ঢাকায় সড়ক আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হলে ১০০ ম্যাজিস্ট্রেটের প্রয়োজন। তবে তাঁদের অধীনে আছেন মাত্র পাঁচ-ছয়জন ম্যাজিস্ট্রেট। তাই সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারলে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ও বিআরটিএ প্রশিক্ষণকেন্দ্রে চলতি মাসে চালকের চোখ ও রক্তচাপ পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানান বিআরটিএ চেয়ারম্যান। তিনি জানান, এরই মধ্যে ২৮৯ জন পেশাদার চালকের চোখ পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় ভীষণ সমস্যা পাওয়া যায় ১৬৪ জন চালকের। অন্যান্য চোখের সমস্যা পাওয়া যায় আরও ৫৯ জন চালকের।
নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ২৪৯ জন চালকের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ৪৭ জনের রক্তচাপের সমস্যা এবং ৬৯ জনের ডায়াবেটিসের সমস্যা পাওয়া যায়। এর বাইরে ধূমপানজনিত বিভিন্ন সমস্যা পাওয়া যায় ১০৯ জন পেশাদার চালকের।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নিরাপদ দিবস উপলক্ষে বিআরটিএর গ্রহণ করা বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান। তিনি জানান, দিবসটি উপলক্ষে ২২ অক্টোবর সকাল ৯টায় ঢাকার দোয়েল চত্বর থেকে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন পর্যন্ত শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় বিভিন্ন অংশীজনদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ গোলচত্বর, মোড়, পদচারী-সেতু, গুরুত্বপূর্ণ স্থান, বাস টার্মিনাল, স্টেশনে সচেতনতামূলক ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার দিয়ে সজ্জিত করা হবে।