তিস্তা ঘিরে ভারতে জলবিদ্যুৎসহ বেশ কয়েকটি প্রকল্প হয়েছে। চাষাবাদের সেচের জন্য তিস্তা ব্যারাজ করা হয়েছে। আদতে কোনো প্রকল্পের সুফল পায়নি ভারতের তিস্তাপারের মানুষ। উল্টো জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আজ দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি।
ভারত ও বাংলাদেশের অমীমাংসিত বিষয়গুলোর মধ্যে কয়েক বছর ধরে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। আজ থেকে প্রায় ৪৯ বছর আগে ১৯৭৪ সালে তিস্তা প্রকল্প শুরু হয়। প্রায় এক দশক পর ১৯৮৩ সালে একটি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থার মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তিস্তার পানির ৩৯ শতাংশ ভারত এবং ৩৬ শতাংশ বাংলাদেশ পাবে। ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ের জন্য ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ পানি ধরে রেখে ভারত ২০১১ সালে বাংলাদেশকে ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ পানি দিতে সম্মত হয়েছিল।
তবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ক্ষমতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার আসার পর বিষয়টি ঝুলে যায়। বিশেষ করে মমতা সরকারের বিরোধিতার কারণে চুক্তিটি হয়নি। তখন থেকে তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একধরনের অস্বস্তি আছে। এই অস্বস্তি কখনো কমেছে, আবার কখনো বেড়েছে। যতই দিন যাচ্ছে, ততই মনে হচ্ছে, দুই পক্ষের আন্তরিক চেষ্টা সত্ত্বেও এই চুক্তি কোনো দিনই হবে না।
খানিকটা এ কারণেই ভারতের বিশেষজ্ঞদের একটা অংশ প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তিস্তার পানিপ্রবাহের সব তথ্য সামনে এনে মানুষকে বিতর্কের সুযোগ করে দেওয়া উচিত। তথ্য গোপন থাকায় মানুষের মনে নানা বিভ্রান্তি তৈরি হয়। সম্প্রতি ভারতের একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাষাবাদের জন্য জমিতে সেচের পানি দিতে পশ্চিমবঙ্গে তিস্তা নদীতে দুটি খাল খনন করা হবে। পরে আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকার দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে তিনটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এতে তিস্তায় পানিপ্রবাহ আরও কমবে এবং বাংলাদেশও কম পানি পাবে।
■ জলবিদ্যুতের জন্য বাঁধের কারণে দার্জিলিংয়ে বনাঞ্চল, পাহাড় ও জনবসতির ক্ষতি।
■ তিস্তায় নতুন করে খাল কাটার যুক্তি দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।
■ তিস্তা ব্যারাজের কারণে উল্টো বন্যায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।
■ পলি জমার সমস্যা ধীরে ধীরে আরও বাড়তে থাকবে।
■ বাঁধ নির্মাণের জন্য পরিবেশসংশ্লিষ্ট তথ্য বিকৃত করা হয়েছে বা প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
■ পলি তুলতে যে অর্থ খরচ হয়, তা খাল কাটার চেয়ে অনেক বেশি।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল ও ফলিত (অ্যাপ্লায়েড) ভূগোলের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সুবীর সরকার দীর্ঘদিন তিস্তা নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলছিলেন, ‘অনেক সময় খবর নেতিবাচকভাবে লেখার কারণে বাংলাদেশে ভুল বার্তা যায়। মনে রাখতে হবে, অভ্যন্তরীণ পানিবণ্টনের জন্য এই খাল কাটা হলে তার সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। বহু আগে থেকেই তিস্তায় দুটি খাল (বাঁ ও ডান) রয়েছে। ডান দিকের খাল বাঁধের সঙ্গে সঙ্গে গেছে। বাঁ দিকেরটিও মোটামুটি প্রস্তুত। এরপর তিস্তার পাড়ে আবার দুটি খাল কেন কাটা হবে, তা আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। এমন কিছু হলে সরকারি নোটিশ প্রকাশ্যে আসা উচিত। এখনো এমন কিছু আমি দেখিনি।’
বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত শরিক দল রেভল্যুশনারি সোশ্যালিস্ট পার্টির (আরএসপি) নেতা সুভাষ নস্কর পশ্চিমবঙ্গের সেচমন্ত্রী ছিলেন। তিনিও বললেন, তিস্তায় নতুন করে কীভাবে খাল কাটা সম্ভব, তিনি বুঝতে পারছেন না।
সুভাষ বলেন, ওই প্রকল্পে অনেক খাল কাটা হয়েছে। নতুন করে কোথায় কাটা হবে, তা জানি না। যেসব খাল কাটা শুরু হয়েছিল, সেগুলোও টাকার অভাবে শেষ করা যায়নি। তথ্য গোপন থাকায় এ ধরনের বিভ্রান্তি বাড়ছে।
উত্তরবঙ্গে তিস্তার কাছাকাছি বড় হয়েছেন সমাজকর্মী সৌমিত্র ঘোষ। তিনি দীর্ঘদিন তিস্তা নিয়ে গবেষণা করেছেন, উত্তরবঙ্গ নিয়ে বইও লিখেছেন। দার্জিলিংয়ে ছোট বাঁধের নামে ২০০২ সালে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তিস্তায় বড় বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। সে সময় বাঁধবিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন তিনি। এক প্রবন্ধে সৌমিত্র দেখিয়েছেন, কীভাবে বাঁধের পর বাঁধ নির্মাণ করে উত্তরবঙ্গে পার্বত্য ও অরণ্য অঞ্চল ধ্বংস করা হয়েছে। এসবের ফলে ধীরে ধীরে কীভাবে নদীর নিচের অংশে পানিপ্রবাহ আরও কমে গেছে।
সৌমিত্র লিখেছেন, ২০০৪ সালে কালিম্পংয়ের ২৭ মাইল এলাকায় ‘তিস্তা লো ড্যাম’ (টিএলডিপি) প্রকল্প-৩ এবং ২০০৬ সালে কালিঝোড়ায় টিএলডিপি প্রকল্প–৪–এর কাজ শুরু হয়। দুই জায়গাই নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয়। নদীকে সরু ‘ডাইভারশন চ্যানেলের’ মধ্যে দিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। টিএলডিপি-৩ প্রকল্প এলাকায় ব্যাপকভাবে ডিনামাইট ব্যবহার করা হয়েছিল। জাতীয় সড়ক ৩১-এ বরাবর ২৭ মাইলের কাছে নদীর দুই পাশের ঢাল ও গাছপালা ধ্বংস হয়েছিল। কালিঝোড়ায় টিএলডিপি-৪ প্রকল্প এলাকায় বাঁ দিকের ঢালের গাছপালাও একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ রকম অসংখ্য উদাহরণ আছে।
সৌমিত্র লেখায় দেখিয়েছেন, বাঁধের কারণে কীভাবে দার্জিলিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেখানে বন্যা ও ভূমিধস বেড়েছে। বনাঞ্চল, পাহাড় ও জনবসতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং মানুষকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হয়েছে। এসবের পরও তিস্তার ওপরের অংশে ছোট ও বড় বাঁধ নির্মাণ থামেনি। বাঁধ নির্মাণের জন্য পরিবেশবিষয়ক যে অনুমতি দরকার বা এলাকার আবহাওয়া, মাটি, ভূবৈচিত্র্য নিয়ে যে ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার, সেসব তথ্য বিকৃত করা হয়েছে বা প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
সৌমিত্র ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বহু বছর তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। আমাকে কিছুই দেওয়া হয়নি। বাঁধ থেকে সেচ—সবকিছু নিয়েই তথ্য চেয়েছি কিন্তু পাইনি। বলা হয়েছে, তিস্তার তথ্য “গোপনীয়”। ২০১৮-১৯ পর্যন্ত চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দিয়েছি।’
সৌমিত্রের মতে, সেচবিষয়ক তথ্য না দেওয়ার আসল কারণ দুর্নীতি। নতুন করে খাল কাটা হলে, যাঁরা কাটছেন, তাঁরাই খাল কাটার কারণ বলতে পারবেন। অঞ্চলটা নানা ধরনের নির্মাণে ভরে গেছে।
তিস্তাসংলগ্ন অঞ্চলে যেসব নির্মাণ হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে চা–বাগান থেকে বহুতল ভবন, আবাসন ও মহাসড়ক।
বাঁধবিরোধী এই আন্দোলনকর্মী বলেন, সারাক্ষণ এসব করতে জমি নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নদীতে পলি জমে অতীতে কাটা খাল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পলি তুলতে যে অর্থ খরচ হয়, তা খাল কাটার চেয়ে অনেক বেশি। দুই দিন পর পর পলি জমবে, আবার খাল বন্ধ হবে। এরপরও যদি খাল কাটা হয়, তবে তার উদ্দেশ্য একটাই—সবার পকেটে কিছু অর্থ আসবে। এ কারণেই তিস্তাতে খাল কাটা হয়। কেন কাটা হয়—এসবের তদন্ত হয় না। তথ্য গোপনের সুযোগ থাকায় দুর্নীতি আরও গভীরতা পায়। ক্ষতিগ্রস্ত হন সমতলের মানুষ, কৃষক ও বাংলাদেশের একাংশের মানুষ।
এসব অভিযোগ নিয়ে জানতে পশ্চিমবঙ্গের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
দুর্নীতি মানে এই দ্বিতীয় কারণটির ব্যাখ্যা দেওয়া যেতে পারে, যা একান্তই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আসল কথা হচ্ছে প্রকল্প হিসেবে তিস্তা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। খোলাখুলিভাবে কথাটি বললেন সাবেক সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর ও অধ্যাপক সুবীর সরকার। তিস্তা নিয়ে গবেষণা করে তথ্য প্রকাশ্যে আনলে এই বিষয়টিও প্রকাশ্যে আসবে। গত অর্ধশতকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যৌথভাবে একটি দিশাহীন প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা যে ঢেলেছে, সেটাও মানুষ জানবে।
সুভাষ নস্কর বললেন, তিস্তার পরিকল্পনা ‘মহৎ’ ছিল। বলা হয়েছিল, সেচের মাধ্যমে ব্যাপক পরিমাণে পানি কৃষিজমিতে পৌঁছানো হবে। কিন্তু অর্থের অভাবে পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে।
রাজ্যের সাবেক এই সেচমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, এই বিশাল প্রকল্প রাজ্য সরকার বাস্তবায়ন করতে পারবে না। কেন্দ্রকে অর্থ দিতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রাথমিকভাবে সহায়তাও দিয়েছিল। শিলিগুড়িতে বিশাল প্রকল্প হয়েছিল। তিস্তা প্রকল্পে অসংখ্য লোক নেওয়া হয়েছিল। রাজ্য সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ দিয়েছে। পরে আমরা বাজেট বাড়াতে পারিনি। খাল ভরাট হয়ে গেছে। জমিতে পানি পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।’
কীভাবে প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন সুভাষ। তিনি বলেন, আপনি দেখবেন, সেখানে মাথার ওপর বড় বড় ‘অ্যাকুয়াডাক্ট’ (পানি সরবরাহের জন্য তৈরি সেতুর ওপরে অবস্থিত চ্যানেল) অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেখানে পানি ঢোকেনি। বড় বড় খাল কাটা হয়েছে, সেগুলো সিমেন্ট দিয়ে বাঁধাই করা হয়েছে। সেসব খাল এখন ঘাসে ভর্তি। মূল নদী থেকে কেবল আশপাশে কিছু জায়গায় সেচের পানি পৌঁছানো গেছে। তিস্তা প্রকল্প মানুষের জন্য আশীর্বাদ নয়, অভিশাপে পরিণত হয়েছে।
অধ্যাপক সুবীর সরকারও বলছেন, তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের মাধ্যমে আশপাশে যে পরিমাণ জমিতে সেচ দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল, তার ১০-১৫ শতাংশের বেশি পূরণ করতে পারেনি এই প্রকল্প।
অধ্যাপক সুবীর সরকারের ভাষায়, তিস্তা প্রকল্প একাধিক সমস্যার জন্ম দিয়েছে। এই সময় শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির রাস্তায় গেলে দেখা যাবে, বন্যার মতো পানি জমে আছে। এসব অবশিষ্ট খালের পানি। আশপাশের ধানি জমি নষ্ট হয়ে গেছে।
দ্বিতীয়ত, নদীতে পলি জমে ব্যারাজের পানি ধারণক্ষমতা অর্ধেক হয়ে গেছে। ব্যারাজের ওপরে উঠে ‘উজানে’ তাকালে দেখা যায়, পলি জমে ছোট ছোট দ্বীপ উঠেছে। এখন ‘বিতরণ খাল’ দরকার, যা আগেই করা উচিত ছিল।
অধ্যাপক সুবীর সরকারের মতে, দুই কারণে এই কাজ করা হয়নি। প্রথমত, রাজ্য সরকারের তহবিল ছিল না, কেন্দ্র থেকে যথেষ্ট অর্থ পায়নি। দ্বিতীয়ত, বিরাট দুর্নীতি হয়েছে। অসংখ্য মামলা হয়েছে। তিস্তা প্রকল্পের অনেক প্রকৌশলী এখনো কারাগারে।
অধ্যাপক সুবীর সরকার বলছিলেন, তথ্য প্রকাশ করা হোক বা খাল কাটা হোক—তিস্তার সমস্যা মিটবে না। অনানুষ্ঠানিকভাবে সরকারি–বেসরকারি পর্যবেক্ষকেরা স্বীকার করেন, ভবিষ্যতে নানা কারণে সমস্যা আরও বাড়বে।
অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক বলেন, প্রধান সমস্যা উন্নয়ন। যত ছোট ছোট কলকারখানা বা কৃষিভিত্তিক শিল্প হবে, ততই উত্তরবঙ্গে এবং সিকিমে নদী থেকে পানি টেনে নেবেন সাধারণ মানুষ। এতে ভাটিতে পানি কমবে। বরফ গলার কারণে তিস্তার হিমালয় অঞ্চল তিস্তা খাংসে থেকে আসা পানির পরিমাণ কিছুটা বাড়লেও জনসংখ্যা এবং শিল্পবৃদ্ধির কারণে সেই বাড়তি পানি টেনে নেওয়া হবে।
দ্বিতীয়ত, পলি জমার সমস্যা ধীরে ধীরে আরও বাড়বে। পলি সরাতে রাজ্য প্রয়োজনীয় অর্থ খরচ করতে পারবে না। এতে পানি চারদিকে ছড়িয়ে এলাকায় সমস্যা আরও বাড়াবে। তৃতীয়ত, সাধারণভাবে উষ্ণায়নের কারণে শুষ্কতা বাড়বে। ফলে প্রাণী তো বটেই, গাছপালারও বেশি পানি লাগবে। সেই পানি উত্তরবঙ্গে তিস্তা থেকেই আসবে, এতে তার প্রবাহ কমবে। ফলে সমস্যা মেটার আশা নেই।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র ২০১২ সালে এই প্রতিবেদককে বলেছিলেন, তিস্তা চুক্তি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। ওই বক্তব্য প্রকাশের পর ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তীব্র সমালোচনা করেছিল। প্রতিবেদনটিকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলা হয়েছিল। এরপর ১১ বছর কেটে গেছে। তিস্তা চুক্তি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা এখনো দেখা যাচ্ছে না।
ভারতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অবস্থায় তথ্য প্রকাশ্যে এনে দুই দেশের মানুষকে বিতর্কের সুযোগ করে দেওয়াই বাস্তবসম্মত। কারণ, অন্য দেশটি যে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সবচেয়ে বড় বন্ধু বাংলাদেশ। এই প্রক্রিয়ায় ভবিষ্যতে তিস্তা নিয়ে অন্তত কূটনৈতিক অস্বস্তি এড়াতে পারবে দুই দেশ। এর বাইরে গিয়ে তিস্তা নিয়ে আরও আলাপ-আলোচনা অযথা সময় নষ্ট বলেই মনে হচ্ছে।