সকালে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো দেখে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ছেড়ে বাড়ি চলে গেছেন অনেকে। এখানে পাঁচটা পয়েন্টে আশ্রয়কেন্দ্র আছে। উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র, শাহপরীর দ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডাঙ্গর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এই চিত্র দেখা গেছে।
আজ রোববার বেলা পৌনে ১১টার দিকে আমরা আসি টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে। দ্বীপ হলেও সড়ক যোগাযোগ আছে এখানে। হঠাৎ করে বৃষ্টি ও বাতাসের তোড় একটু একটু বাড়তে শুরু করে। আমরা ঢুকলাম শাহপরীর দ্বীপ উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্রে। নিচতলায় ছেলে মেয়েরা খেলছে। কিন্তু বড় দুটি দালানে খুব বেশি মানুষ নেই।
স্থানীয় যুবক মো. শাকিল বললেন, তাঁর পরিবারের ১০ জন সদস্য। রাতে সবাই আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছিলেন। সকালে পরিস্থিতি ভালো দেখে বাড়ি চলে গেছেন। ‘কেন?’ এমন প্রশ্নে বললেন, ‘বাড়ি ঘর হাঁস মুরগি আছে। ঝড় শুরু হলে আবার সবাই চলে আসবেন।’
এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শশাঙ্ক মোহন পাল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দুই ভবনে মোট ৩ হাজার ২০০ মানুষ আশ্রয় নিতে পারে এখানে। গতকাল শনিবার রাতে ৭০০ জনের মতো আশ্রয় নিয়েছিলেন। সকালে অনেকে চলে গেছেন।
এরপর আমরা গেলাম পশ্চিমপাড়া। এখানে একদম সাগর ঘেঁষেই ডাঙ্গর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র। বাইরে থেকেই দেখা যায় অনেকটা ফাঁকা। বেড়িবাঁধে দাঁড়িয়ে দেখা যায় সাগরের ঢেউ বড় হচ্ছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রেজাউল করিমের সঙ্গে কথা হয় এখানে। তিনি বলেন, রাতে অনেকে এসেছিলেন আশ্রয়কেন্দ্রে। সকালে অনেকে বাড়ি গেছেন। ঘরবাড়ি আসবাব হাঁসমুরগি দেখতে। তিনি বলছিলেন, আসলে এখানকার মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে অভ্যস্ত। দিনে তাঁরা কম ভয় পান। সকালে অবস্থা ভালো ছিল। পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করলে সবাই আবার আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাবে।
আজ সকাল পৌনে ১০টায় দেওয়া ১৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অফিস বলেছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা এখন কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করছে। এর প্রভাবে উপকূলে শুরু হয়েছে বাতাস ও বৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, মোখা আরও উত্তর বা উত্তর পূর্ব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর আজ বিকেলের মধ্যেই এটি কক্সবাজার ও উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম শেষ করবে।