এক ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের (গভর্নিং বডি) সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদের আগাম জামিন আবেদন ফেরত দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার আবেদনটি ফেরত দেন।
এর আগে বিষয়টি শুনানির জন্য উঠলে পরিচালনা পর্ষদের (গভর্নিং বডি) সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদের উদ্দেশে একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘আপনি কাজটি নৈতিকভাবে ঠিক করেননি।’
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে ১ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এ নালিশি মামলা করেন শিক্ষার্থীর বাবা। মামলায় ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীর বিরুদ্ধে। আদালত বাদীর (ছাত্রীর বাবা) জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি গুলশান থানাকে এজাহার হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করার আদেশ দেন। সে অনুযায়ী মামলাটি থানা-পুলিশ নথিভুক্ত করে।
এই মামলায় হাইকোর্টে আইনজীবীর মাধ্যমে আগাম জামিনের আবেদন জানান খন্দকার মুশতাক আহমেদ। জামিন আবেদনের শুনানি থাকায় আদালতে হাজির হন তিনি। মুশতাকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী সোহরাব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।
রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ক্রম অনুসারে বেলা ১১টার দিকে বিষয়টি উঠলে মুশতাকের উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘আগে আপনি বিবাহিত ছিলেন কি?’ তখন মুশতাক বলেন, আগের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে। মুশতাকের আইনজীবী বলেন, তাঁদের (ছাত্রী ও মুশতাক) বিয়ে হয়ে গেছে। ছাত্রী প্রাপ্তবয়স্ক। একপর্যায়ে মুশতাকের উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘আপনি নৈতিকভাবে কাজটি ঠিক করেননি।’ মুশতাকের আইনজীবী বলেন, ওই মামলার অপর আসামিকে হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চ জামিন দিয়েছেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করলে শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘আমরা এই আবেদন শুনতে আগ্রহী নই।’ পরে মুশতাকের আইনজীবী আবেদন ফেরতের আরজি জানালে আদালত তা ফেরত দেন।
এর আগে ১৪ আগস্ট ওই মামলায় হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী। এই জামিনাদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। আবেদনটি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম আজ বুধবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন। ফলে ফাওজিয়া রাশেদীকে হাইকোর্টের দেওয়া আগাম জামিন বহাল রইল বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সায়েম মুরাদ। অন্যদিকে ফাওজিয়া রাশেদীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নূরুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান।