দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস ও ছাত্ররাজনীতিতে এখন থেকে ‘শুদ্ধ এবং সুস্থ’ ধারার চর্চা শুরুর আশা প্রকাশ করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় একটি রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ছাত্রশিবিরের সভাপতি এমন আশাবাদ ব্যক্তি করেন।
মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘অতীতে সব রাজনৈতিক ধারার সংগঠনকে ক্যাম্পাসে সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমরা চাই, সব ছাত্রসংগঠনই ক্যাম্পাসে থাকবে এবং তারা সহাবস্থান নিশ্চিত করবে। এর মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস, মাদকসহ নৈতিকতা বিবর্জিত চর্চার বিপরীতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি শুদ্ধ ধারার নতুন সংস্কৃতি চালু হবে। এতে জাতি উপকৃত হবে।’
ছাত্রশিবিরের সভাপতি দাবি করেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে লগি-বইঠার রক্তাক্ত তাণ্ডবের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের উত্থান শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্রশিবির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, কারাবরণ এবং ২০১০ সালে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের গ্রেপ্তার, নির্যাতন, কারাবরণ এবং অসংখ্য নেতাকে প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। ছাত্রশিবিরের শত শত কর্মীকে শহীদ করা হয়। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়, যার চূড়ান্ত পরিণতি ছিল ২০২৪ সালে।
ছাত্রশিবিরের সভাপতি বলেন, ‘ছাত্রজনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসনের বিদায় হলেও এখনো ফ্যাসিস্ট শাসনের নগ্ন হস্তক্ষেপ প্রকাশ পাচ্ছে। যারা এখনো এই ফ্যাসিবাদের পক্ষে কথা বলে, তাদের দেখতে পাচ্ছি। জাতিকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার চক্রান্ত হচ্ছে।’
ছাত্রশিবিরকে ছাত্ররাজনীতির খুব সামান্য একটি অংশ বলে উল্লেখ করে সংগঠনটির সভাপতি বলেন, ছাত্রদের মেধার বিকাশ ঘটিয়ে একটি জাতির সমৃদ্ধ সম্পদে পরিণত করার ভূমিকা পালন করে থাকে ছাত্রশিবির। সৎ, দক্ষ, দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরি মধ্য দিয়ে এই দেশ আরও সমৃদ্ধ হোক—এটাই চায় শিবির। এ জন্য তারা ছাত্রদের ক্যারিয়ার গঠনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। সেই সঙ্গে ছাত্রকল্যাণমূলক কাজে সহযোগিতা দিয়ে থাকে।
মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ছাত্ররাজনীতির গুণগত পরিবর্তন চাই। ক্যাম্পাস শিক্ষা উপযোগী হোক, ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক কোনো কর্মসূচি পালন না হোক। ছাত্ররাজনীতিতে শুদ্ধ এবং সুস্থ ধারার সৃষ্টি হোক। আওয়ামী দুঃশাসনে ছাত্ররা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। এখন ছাত্ররা তাদের অধিকার ফিরে পাক। কোনো রাজনৈতিক সংগঠনই রাষ্ট্রযন্ত্রের শক্তি হিসেবে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির না করুক, এমন ধারার রাজনীতি চালু হোক—এটাই ছাত্রশিবিরের চাওয়া।’
ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম, প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমান, প্রচার সম্পাদক সাদেক আবদুল্লাহ, মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক আবদুর রহিম, ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, আইন সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান, স্কুল সম্পাদক সিদ্দিক আহমেদ, অর্থ সম্পাদক মিজবাহ উদ্দীন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আহমেদ তাওফিক, বিতর্ক সম্পাদক মিজবাহুল করিম ও ক্রীড়া সম্পাদক আসাদুজ্জামান প্রমুখ।