তীব্র শীতে মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ হলেও খোলা সীতাকুণ্ডের প্রাথমিক বিদ্যালয়। তবে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার ছিল খুবই কম। আজ সকাল ১১ টায় বাড়বকুণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
তীব্র শীতে মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ হলেও খোলা সীতাকুণ্ডের প্রাথমিক বিদ্যালয়। তবে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের  উপস্থিতির হার ছিল খুবই কম। আজ সকাল ১১ টায় বাড়বকুণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

কনকনে শীতে সীতাকুণ্ডের মাধ্যমিক বন্ধ রাখা হলেও খোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়

শৈত্যপ্রবাহের কারণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে খোলা রয়েছে উপজেলার সরকারি-বেসরকারি ১৭৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে শিশুদের। এতে তাদের সুস্থতা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকেরা।

আবহাওয়া অফিস থেকে পাওয়া বার্তা অনুযায়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয় বন্ধের নির্দেশ দিলেও প্রাথমিকের ক্ষেত্রে তেমনটা ঘটেনি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুঠোফোনে দেখানো তাপমাত্রার ওপর ভরসা করে বিদ্যালয় খোলা রেখেছেন বলে জানান।

সীতাকুণ্ড আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে সে এলাকার সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো।

এ বিষয়ে কথা হয় বাঁশবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম নুরুন নেওয়াজের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকাল ১০টা থেকে তাঁদের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা। কনকনে ঠান্ডার কারণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। তবে বিদ্যালয় বন্ধের বিষয়ে তাঁরা কোনো নির্দেশনা পাননি।

উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রাখার বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়ার কথা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুচ্ছোফা বলেন, তাঁর মুঠোফোনে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখিয়েছে। তাই তিনি বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করতে পারছেন না। তা ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করবেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক। তাঁর থেকে এ ধরনের কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম সকাল ১০টা থেকে চলছে। ততক্ষণে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে তাঁর ধারণা।

সকাল ১১টার দিকে বাড়বকুণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুবই কম। পঞ্চম শ্রেণিতে ৮০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মধ্যে উপস্থিত ছিল মাত্র সাতজন।

কেদারখিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শংকরী চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকে অনেক ঠান্ডা। তবে তাঁরা বিদ্যালয় বন্ধের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা পাননি। প্রাক্‌-প্রাথমিক শ্রেণিতে মোট শিক্ষার্থী ৪৪ জন হলেও আজকের উপস্থিতি ৩৩ জন। দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৬৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত রয়েছে ৪৯ জন।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিরা থেকে চট্টগ্রাম নগরের সিটি গেট পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে স্কুলগামী শিশুশিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছেন। এ সময় কয়েকজন অভিভাবক ঠান্ডার মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রাখা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রাখার বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা আলম সরকার বলেন, ঠান্ডা বেড়েছে বোধ হওয়ায় তিনি নিজে সীতাকুণ্ড আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি জানার পর উপজেলার প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য গঠিত একটি গ্রুপে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করে দেন তিনি। শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।