বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আজ দুপুর ১২টার দিকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিস ছেড়ে বের হয়ে যান
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আজ দুপুর ১২টার দিকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিস ছেড়ে বের হয়ে যান

সচিবালয়ে আজ যেমন চিত্র দেখা গেল

বেলা তখন ১১টা পেরিয়ে গেছে। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে তখনো দু-একজন কর্মকর্তা অফিসে আসছেন। কোনো কোনো কর্মকর্তার দপ্তর তখনো ফাঁকা, আসেননি। তবে অধিকাংশই কর্মকর্তা-কর্মচারীই অফিসে এসে গেছেন। কিন্তু অফিসে এলেও নেই কোনো কাজকর্ম। দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলে সময় পার করছেন। কিন্তু অনেকের চোখেমুখেই আতঙ্ক। বিভিন্ন অফিসপ্রধানের কক্ষ থেকে নামিয়ে ফেলা হয়েছে পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী দেশত্যাগ করা শেখ হাসিনার ছবি।

প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে আজ মঙ্গলবারের চিত্র এটি। সরকারের পদত্যাগের এক দফা আন্দোলনের মুখে গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এখন দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আজ–কালের মধ্যে তা হতে পারে।

এ অবস্থায় আজ সচিবালয়ের চিত্র পাল্টে গেছে। নেই চিরচেনা রূপ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখা গেল, অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর চোখেমুখে ভয়ের ছাপ। শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগের পর স্বাভাবিকভাবেই মন্ত্রীরা আর আসেননি। তবে বেশ কয়েকজন সচিব অফিস করেছেন।

আইন মন্ত্রণালয়ে দেখা গেল, মন্ত্রী আনিসুল হকের নামফলক মুছে ফেলা হয়েছে। জানতে চাইলে তাঁর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানালেন, কে মুছে ফেলেছে তা তিনি জানেন না।

অন্য একটি দপ্তরের একজন কর্মকর্তার কক্ষে গিয়ে দেখা গেল, পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি নেই। তবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙানো আছে।

এদিন বিভিন্ন দেয়াল থেকে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবিসহ অন্যান্য ব্যানার-ফেস্টুন সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, এখন কার্যত সরকার নেই। ফলে আজ তাঁরা তেমন কোনো নির্দেশনাও পাননি। সরকারি চাকরি করেন, তাই অফিসে এসেছেন।

সরকারি অফিস সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আজ দুপুর ১২টার দিকেই কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিস ছেড়ে বের হয়ে যান। এ সময় কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জানালেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আজ ‘অটো ছুটি’ হয়ে গেছে।