ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে গত বুধবার রাতে শুরু হওয়া হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টি আজ শুক্রবার দুপুরের মধ্যেই বিদায় নিয়েছে। আকাশে যে মেঘ ছিল, তা–ও কেটে গেছে। মেঘ-বৃষ্টির বিদায়ের পর দেশের বেশির ভাগ এলাকায় তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। তাপমাত্রা কমার এই প্রবণতা আগামীকাল শনিবারও অব্যাহত থাকবে। এতে বেড়ে যাবে শীতের অনুভূতি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, শনিবার রাতে তাপমাত্রা আরও ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। আগামী রোববার ভোরের দিকে সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। দিনের তাপমাত্রাও সামান্য কমতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত একেবারেই হালকা বৃষ্টি ছিল। এরপর মেঘ সরে যেতে থাকে। একই সঙ্গে তাপমাত্রাও কিছুটা কমে আসে। সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও কমে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে।
১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজশাহী, নওগাঁ, পাবনা ও পঞ্চগড়ের বেশ কিছু এলাকায় তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ। তিনি জানান, ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে বলা হয় স্বস্তিদায়ক তাপমাত্রা। এর নিচে তাপমাত্রা থাকলে শীতের অনুভূতি পাওয়া যায়। তবে বয়স ও শারীরিক কাঠামো ভেদে শীতের অনুভূতি কমবেশি হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে দিনাজপুরে ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ছিল।
গ্রামাঞ্চলে শীতের অনুভূতি মহানগরীর তুলনায় বেশি হয়ে থাকে। কারণ, নগরের ইট-পাথরের দেয়াল দিনের বেলা তাপ ধরে রাখে, যা ঘরকে উত্তপ্ত রাখে। ভোরের দিকে দেয়াল ঠান্ডা হয়ে গেলে শীত অনুভূত হয়। যদিও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টির কারণে ইতিমধ্যে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ঢাকায় এখন কিছুটা শীত অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে আজ সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ভেতরে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে বান্দরবানে, ২৯ মিলিমিটার। একই সময়ে ঢাকায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ মিলিমিটার। এ ছাড়া আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে সৈয়দপুরে ২৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত ২৯ নভেম্বর দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছিল। সেটি ক্রমেই ঘনীভূত হয়ে ২ ডিসেম্বর নিম্নচাপে পরিণত হয়। পরের দিন গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়ে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় ধেয়ে আসে। রূপ নেয় মিগজাউম নামের ঘূর্ণিঝড়ে। ঘূর্ণিঝড়টির বিদায়ের পরই মূলত শীতের অনুভূতি বাড়ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের মাসিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে দেশের কোথাও কোথাও এক থেকে দুটি মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।