গণমাধ্যমকে স্বাধীন, বস্তুনিষ্ঠ ও শক্তিশালী করতে সংস্কার উদ্যোগের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সংস্কার বাস্তবায়নে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বিভিন্ন সাংবাদিক ইউনিয়ন ও সংগঠনের নেতারা। তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, কমিশন ফ্যাসিবাদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত করে গণমাধ্যমকে সত্যিকার গণমাধ্যমে রূপান্তরিক করতে পারবে।
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন। কমিশন কার্যালয়ে এ সভা হয়। পরে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেন, বিগত সরকারের ১৫ বছরে অনেক মানুষ গুম হয়েছে। সেগুলোর সংবাদ–গণমাধ্যমে লেখা হয়নি। গণমাধ্যম গণমানুষের হতে পারেনি। দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল।
সাংবাদিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন সংস্থার হস্তক্ষেপ ও ফোনে আড়িপাতা বন্ধের অনুরোধ করেন কাদের গণি চৌধুরী।
এ সময় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারকে দানবে পরিণত করার জন্য গণমাধ্যমগুলো দায়ী। কোন কোন গণমাধ্যম এ ভূমিকা পালন করেছে, তার চিত্র আছে কি না, তা পরিষ্কার করা দরকার।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব খুরশীদ আলম বলেন, ভূরি ভূরি পত্রিকা বের হচ্ছে, কিন্তু তাদের কোনো অবকাঠামো নেই। অথচ এসব পত্রিকা সার্কুলেশন বেশি দেখিয়ে বিজ্ঞাপন বিল বেশি নিচ্ছে।
আলোচনা সভায় ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক জাওহার ইকবাল খান বলেন, প্রেস কাউন্সিল শক্তিশালী থাকলে গণমাধ্যম সংস্কারের প্রয়োজন হতো না। বেতন কাঠামো পরিবর্তন ও শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন থাকা দরকার।
বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক শাহনাজ সিদ্দিকী বলেন, নারী সাংবাদিকেরা বেতন ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে বৈষম্যের স্বীকার হন। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ সময় বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, ফটোসাংবাদিক নিয়োগে চরম অনিয়ম করা হয়। মোটরসাইকেল ও নিজস্ব ক্যামেরা না থাকলে নিয়োগ হয় না।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি রোজী ফেরদৌসী, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি মুক্তাদির অনিক।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদের সঙ্গে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশন সদস্য অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, শামসুল হক, আখতার হোসেন খান, কামরুন্নেছা হাসান, সৈয়দ আবদাল আহমদ, জিমি আমির, মোস্তফা সবুজ, টিটু দত্ত গুপ্ত ও আব্দুল্লাহ আল মামুন।