মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান

বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বকে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র: বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঢাকা-ওয়াশিংটন অংশীদারত্বের কথা উল্লেখ করে গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অসাধারণ অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন। বাইডেন বলেছেন, ‘২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে আমি বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের স্থায়ী অংশীদারত্বের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে স্মরণ করি।’

সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের পরিচয়পত্র গ্রহণকালে এক লিখিত মন্তব্যে বাইডেন এসব কথা বলেন। পরিচয়পত্র পেশকালে রাষ্ট্রদূত ইমরান মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা জানান। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে প্রচারিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে বাইডেন বলেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্প্রসারণে মার্কিন প্রশাসন তাঁর সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমার প্রশাসন দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করার জন্য আপনার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। কারণ, আমরা আগামীর সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব। ওয়াশিংটনে আপনাকে স্বাগত জানাতে পেরে আমি আনন্দিত।’

বাইডেন তাঁর লিখিত মন্তব্যে গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ‘একটি অসাধারণ গল্প’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবিক, উদ্বাস্তু, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা, সন্ত্রাস দমন, সামুদ্রিকসহ অন্যান্য নিরাপত্তা ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, বাংলাদেশ তার বৃহত্তর কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিকে একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক শক্তিতে প্রসারিত করেছে, যা বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনে একটি প্রধান অংশগ্রহণকারী হতে প্রস্তুত।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান

বাইডেন বলেন, ‘আমি আশা করি, বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো গণতান্ত্রিক শাসন, জলবায়ু পরিবর্তন, শরণার্থী ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ চালিয়ে যাবে। আমরা বাংলাদেশের সাফল্যের জন্য বিনিয়োগ করছি। বাংলাদেশের সব নাগরিক যাতে স্বাধীনভাবে এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার সামর্থ্য অর্জন করে, দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে, সে জন্য আমরা তাঁদের সমর্থন করি।’

প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, তাঁরা এই উদ্বাস্তু ও তাদের আশ্রয়দাতাকে সহায়তা, তাদের অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে। যুক্তরাষ্ট্র এই মানবিক সংকটের টেকসই ও স্থায়ী সমাধান খুঁজতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

করোনা মহামারি বিষয়ে বাইডেন বলেন, কোভিড-১৯ গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যানের আওতায় বৈশ্বিক মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব করতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা সামনের মাস ও বছরগুলোয় আমাদের ক্রমবর্ধমান অংশীদারত্ব প্রসারিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

করোনা মহামারির পরে প্রথমবারের মতো হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট দেশটিতে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের পরিচয়পত্র ব্যক্তিগতভাবে গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইমরানসহ বিভিন্ন দেশের ১০ জন রাষ্ট্রদূত এই পরিচয়পত্র পেশ করেন।

হোয়াইট হাউস থেকে ফেরার পর রাষ্ট্রদূত ইমরান বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।