ভারত সফর থেকে বাংলাদেশ কী পেল, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই প্রশ্নটি খুবই আপেক্ষিক। তিনি বলেছেন, ‘একেবারে শূন্য হাতে এসেছি, সেটি বলা যাবে না।’
৫ সেপ্টেম্বর চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত সফরে যান প্রধানমন্ত্রী। সে সফর নিয়ে আজ বুধবার বিকেল চারটায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ইউএনবির সম্পাদক ফরিদ হোসেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, ভারত সফর থেকে কী পেল বাংলাদেশ?
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনার নিজের ওপর নির্ভর করছে, সফরটিকে কীভাবে দেখছেন। ভাগ্যিস আপনি প্রশ্ন করেননি, আমরা ভারতকে কী দিলাম। আমার কথা হচ্ছে, এই সফর থেকে যা যা পেয়েছি, তা বলেছি। মনে রাখতে হবে, ভৌগোলিকভাবে আমাদের চারদিকে ভারত। একদিকে মিয়ানমার। সেই বন্ধুপ্রতিম দেশটি থেকে ব্যবসা, বাণিজ্য, কৃষি যোগাযোগসহ সব বিষয়ে সহযোগিতা পাচ্ছি। আমরা ভারত থেকে পাইপলাইনে করে তেল নিয়ে এসেছি। আমরা যা পণ্য উৎপাদন করি, তারপরও তাদের কাছ থেকে পণ্য আমদানি করতে হয় আমাদের। এবারের সফরে এলএনজি আমদানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা খুলনার ওই অঞ্চলের জন্য এলএনজি আনতে পারি। ওই দিকে গ্যাসের সমস্যা আছে। এভাবে হিসাব করেন, একেবারেই শূন্য হাতে এসেছে, সেটা বলতে পারবেন না। তবে কী পেলাম বা না পেলাম, তা মনের ব্যাপার। মন যদি বলে কিছুই পাইনি, তবে আমার কিছু বলার নেই। যেমন বাংলাদেশে আমরা এত কাজ করার পরও বিএনপি বলে কিছুই করি নাই। এখানে আমার কিছুই বলার থাকে না। এখানে বিশ্বাসের ব্যাপার। আত্মবিশ্বাসের ব্যাপার।’
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে নির্মিত ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ ছবিটির ট্রেলার নিয়ে সমালোচনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ফরিদ হোসেন। ছবিটি কবে নাগাদ মুক্তি পেতে পারে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ছবিটির এডিটিং চলছে। ট্রেলার দেখার পর অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। একটা বিষয় আপনাদের বলতে পারি, ট্রেলার যদি গ্রহণযোগ্য না হতো, তাহলে ফ্রান্সের কান উৎসব ছবিটি কখনো গ্রহণ করত না। কাজেই এর গুণগত মান নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলতে পারে। কিন্তু বিবেচনা করতে হবে, কান উৎসব যেনতেন কিছু গ্রহণ করে না। মানহীন কিছু দেখাতে দেয় না।’
ছবিতে অভিনয় করা শিল্পীদের প্রশংসা করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমি যেটা বুঝি, আসলে ৭ মার্চে এভাবে জাতির পিতাকে দেখার পর সেটাকে অভিনয় করে দেখালে এটা মেনে নিতে অনেকের একটু কষ্ট হয়। এটাই সমস্যা। সিনেমা যখন হবে, এখানে কাউকে না কাউকে অভিনয় করতেই হবে। আমি তো মনে করি, যেটুকু করেছে, চমৎকার করেছে। ছবির ট্রেলার কান উৎসবে যাওয়ার আগে যেটুকু দেখেছি, ভালো লেগেছে। যেখানে যেখানে সংশোধনের দরকার, তা বলেছি। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, কান উৎসবে ছবিটি যদি প্রেজেন্টেবল না হতো, তারা এটা দেখাত?’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনাদের মনের ভেতরে যিনি (বঙ্গবন্ধু) আছেন, তাঁকে তো ফিরিয়ে আনতে পারব না। এটা যখন সিনেমা, এটাকে সিনেমা হিসেবেই দেখতে হবে। যিনি অভিনয় করেছেন, তাঁকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। সেই চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলা কঠিন কাজ। আর সেটা যদি বঙ্গবন্ধুর চরিত্র হয়, সেটা তো আরও কঠিন। আমি বলব, এখানে যারা অভিনয় করেছে, অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। অনেক অভিনেতাও তা পারে না।’ ছবিটির এখন এডিটিং চলছে। একটা ভালো সময় দেখে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই বায়োপিকের পরিচালক শ্যাম বেনেগাল।