চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের জেটি থেকে সরানো হলো ১৮ জাহাজ

ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সমুদ্রবন্দরের জেটি থেকে সরানো হয়েছে জাহাজ। শনিবারের ছবি।
প্রথম আলো

ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলার অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের জেটি থেকে পণ্যবাহী ১৮টি জাহাজ সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বন্দরে পণ্য ওঠানো-নামানো ও খালাস কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এসব পদক্ষেপ নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল শুক্রবার রাত ৯টায় ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেত জারি করে। এরপর বন্দরের নিজস্ব সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়। এ অনুযায়ী বন্দরের পরিচালন কার্যক্রম ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক আজ শনিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের জেটি থেকে ১৮টি জাহাজ সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। দুটি জাহাজ বিকেলের জোয়ারের সময় সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বন্দরের পরিচালন কার্যক্রম এখন বন্ধ।

জেটি থেকে কেন জাহাজ সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, তা জানতে চাইলে ওমর ফারুক বলেন, বড় জাহাজগুলো জেটিতে থাকলে ঢেউয়ের কারণে জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে সাগরে জাহাজগুলো ইঞ্জিন চালু রেখে ঢেউ বা ঝড়ের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে ভাসতে পারে। এ জন্য সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়াতে বড় জাহাজগুলো সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বন্দর কর্মকর্তারা জানান, মূলত দুর্যোগ মোকাবিলায় কখন কী করতে হবে, তা ঠিক করতে বন্দরের নিজস্ব প্রস্তুতির জন্য এই সতর্কতা জারি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ১৯৯২ সালে বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রণীত ঘূর্ণিঝড়-দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী পুনর্বাসন পরিকল্পনা অনুযায়ী, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেত অনুযায়ী চার ধরনের সতর্কতা জারি করে বন্দর।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তর ৩ নম্বর সংকেত জারি করলে বন্দর প্রথম পর্যায়ের সতর্কতা বা অ্যালার্ট-১ জারি করে। আবহাওয়া অধিদপ্তর ৪ নম্বর সংকেত জারি করলে বন্দর অ্যালার্ট-২ জারি করে। বিপৎসংকেত ৫, ৬ ও ৭ নম্বরের জন্য বন্দরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা অ্যালার্ট-৩ জারি করা হয়। মহাবিপৎসংকেত ৮, ৯ ও ১০ হলে বন্দরেও সর্বোচ্চ সতর্কতা বা অ্যালার্ট-৪ জারি করা হয়। সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি হলে বন্দর জেটিতে অবস্থানরত জাহাজগুলোকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার গতি বাড়ছে। বাংলাদেশের উপকূলের সঙ্গে এর দূরত্বও কমছে। আজ সন্ধ্যার দিকে এ ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব কক্সবাজার ও এর কাছাকাছি উপকূলীয় এলাকায় পড়তে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।