আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও স্বেচ্ছাসেবকদের তৎপরতায় বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যু কমেছে।
গত বছরের প্রায় পুরোটা সময় বাংলাদেশে হানা দিয়েছিল একের পর এক দুর্যোগ। আর এ বছর শীত না যেতেই শুরু হয়েছিল তাপপ্রবাহ, যা পরে রেকর্ড ভাঙল। এরপর এল ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাত। এখন চলছে কালবৈশাখী আর বজ্রপাতে একের পর এক মৃত্যু। এতে মানুষের জীবনযাত্রা ও সম্পদের ক্ষতি বাড়ছে। সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরা সবচেয়ে বেশি বিপদে আছেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের মানুষের দুর্যোগ পরিস্থিতি বেড়ে যাওয়ার এই তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ারের প্রতিবেদনে। ৯ মে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক কমে এসেছে। কিন্তু অতি উষ্ণতা ও বজ্রপাতের মতো নতুন ধরনের দুর্যোগে মৃত্যু ও বিপদ বাড়ছে। বাংলাদেশের ৮৩ শতাংশ মানুষ সারা বছর এ ধরনের কোনো না কোনো জলবায়ু দুর্যোগের শিকার। কেবল ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বছরে ক্ষতি ১০ হাজার কোটি টাকার ওপরে।
আমাদের দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেসব দুর্যোগ বাড়ছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান দরকার। যাতে আমরা বিশ্বদরবারে তা তুলে ধরে এসব পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক তহবিল জোগাড় করতে পারি।আইনুন নিশাত, ইমেরিটাস অধ্যাপক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়
প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ইয়ান ফ্রাই। এ উপলক্ষে গত বছরের ৪ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশে এসে খুলনা ও সিলেট সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট গবেষণাগুলোকে আমলে নিয়ে তিনি প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন।
প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাজেটের ৭ শতাংশ অর্থ ব্যয় করছে। জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে তা বাস্তবায়নে কাজ করছে।
প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে। এ বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ অধিবেশনে প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হবে। একই সঙ্গে জলবায়ুর বিষয়টিকে বাংলাদেশের মানবাধিকারের আওতাভুক্ত করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে জাতিসংঘের ভূ–উপগ্রহবিষয়ক সংস্থা ইউএনসেট ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রাথমিক প্রভাব নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছে। তারা বলছে, বাংলাদেশের ভূখণ্ডের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে। আর সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক হিসাবে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী ও ফেনীর ২৬টি উপজেলা ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতির শিকার। এতে মোট ৪ লাখ ২৯ হাজার ৩৩৭ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ২ হাজার ৫২টি বাড়িঘর পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা ১০ হাজার ৬৯২। এর মধ্যে বেশি ক্ষতি হয়েছে টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরের ঘরগুলো।
মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা দিতে হবে সামগ্রিক দিক বিবেচনা করে, এমন অভিমত দিলেন জয়েন্ট নিডস অ্যাসেসমেন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক কায়সার রিজভী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, উপকূলের বড় অংশের মানুষের পেশা মাছ ধরা। ২০ মে (আজ) থেকে সমুদ্রে মাছ ধরা নিষেধ। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত জেলেরা আরও বিপদে পড়ছেন। বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট–আইআইইডির একটি গবেষণার বরাত দিয়ে জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ারের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রায় ৪৩ শতাংশ গ্রামীণ বসতি বন্যার কবলে পড়ে। আর প্রায় ৪১ শতাংশ বসতি ঝড়ের আঘাতের শিকার হয়।
প্রায় ৮৩ শতাংশ মানুষ দাবদাহ, বজ্রপাত ও শৈত্যপ্রবাহের মতো দীর্ঘমেয়াদি দুর্যোগের কারণে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সমুদ্রসীমা থেকে প্রায় ৩ মিটার উঁচুতে থাকা হাওর এলাকায় কয়েক বছর পরপর হঠাৎ বন্যা হয়। এর বাইরে খরা ও উপকূলে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ার সমস্যাও বাড়ছে। দেশের খুলনা এলাকাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১ মিটার উঁচুতে হওয়ায় ঝড়–বৃষ্টি হলে সেখানে জোয়ারের পানি উঠে যায়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যু বেড়ে গেছে। প্রতিবছর তিন শতাধিক মানুষ বজ্রপাতে মারা যায়। নতুন এ দুর্যোগ পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। বাংলাদেশে অবনতি হচ্ছে দাবদাহ পরিস্থিতিরও। গত বছর, মানে ২০২২ সালটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম উষ্ণতম বছর ছিল।
‘আমরা ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যু কমিয়ে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। এখন বন্যা মোকাবিলায় আরও আশ্রয়কেন্দ্র বানাচ্ছি। সরকারের পাশাপাশি আমাদের স্বেচ্ছাসেবকেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।’এনামুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, দেশের বজ্রপাতপ্রবণ এলাকাগুলোতে বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র (লাইটেনিং অ্যারেস্টার) এবং আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি এলাকায় বজ্রপাত শুরুর আধা ঘণ্টা আগে পূর্বাভাস দেওয়া হবে, যাতে স্থানীয় লোকজন ওই আশ্রয়কেন্দ্র যেতে পারে।
মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি টেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক শামসুদ্দিন শহিদ প্রথম আলোকে বলেন, নগরে অতি উষ্ণতা সমস্যার জন্য বৈশ্বিক উষ্ণতার পাশাপাশি অপরিকল্পিত নগরায়ণ বড় ভূমিকা রাখছে। ফলে জরুরিভাবে জলাভূমি ভরাট ও বৃক্ষনিধন বন্ধ করতে হবে। নগরগুলো যাতে উষ্ণ দ্বীপ না হয়ে ওঠে, সে জন্য পরিকল্পিতভাবে পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো তৈরি করতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের একটি সমীক্ষার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বছরে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ১০০ কোটি ডলারের (১০ হাজার কোটি টাকা) সমপরিমাণ সম্পদের ক্ষতি হয়। বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বিশ্বে গ্রিনহাউস গ্যাস বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করেন জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার। তিনি বলেন, শিল্পোন্নত দেশগুলোকে বাংলাদেশের ওই ক্ষয়ক্ষতির জন্য সহায়তা করা দরকার।
বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার বাংলাদেশের সিলেট ও খুলনা জেলার বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের সময় ওই ক্ষয়ক্ষতির বাস্তব চিত্র দেখতে পান।
প্রতিবেদনে ২০০৭ সালে হওয়া সিডর থেকে ২০২০ সালে আম্পান পর্যন্ত চারটি ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যু ধারাবাহিকভাবে কমার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সরকার একটি প্রকল্পের আওতায় সাড়ে চার লাখ পরিবার আশ্রয় নিতে পারে, এমন ২২ হাজার ৬৪০টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করছে।
জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যু কমিয়ে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। এখন বন্যা মোকাবিলায় আরও আশ্রয়কেন্দ্র বানাচ্ছি। সরকারের পাশাপাশি আমাদের স্বেচ্ছাসেবকেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের দুর্যোগ বেড়ে যাওয়ায় কিশোরী ও নারীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছে। এমনিতেই বাংলাদেশের নারীরা সমাজে নানা বঞ্চনা ও বৈষম্যের শিকার। এর সঙ্গে দেশের উপকূলীয় ও পার্বত্য এলাকায় খাওয়ার পানি সংগ্রহের দায়িত্ব বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের পালন করতে হয়। বাসাবাড়ির স্যানিটেশনের সমস্যার কারণে তাদের বেশি ভুগতে হয়।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতের সময় ক্ষতিগ্রস্ত একজন মুন্ডা নৃগোষ্ঠীর নারীর সঙ্গে জাতিসংঘের ওই বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার কথা বলেন। ওই নারী তাঁকে জানান, ঝড়ের সময় তিনি সন্তানসম্ভবা ছিলেন। ঝড়ের রাতে তিনি স্থানীয় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান, ওই সময়ে তার সদ্যোজাত সন্তান মারা যায়।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তৈরি হওয়া নারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যার দিকেও আলোকপাত করা হয় প্রতিবেদনে। ওই পরিবর্তনের কারণে তাদের প্রজনন ও যৌনস্বাস্থ্য প্রভাবিত হচ্ছে। তিনি একটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন, যাঁরা স্কুলের একটি কক্ষে ১৯ দিন অবস্থান করেন। কিন্তু ওই স্কুলের শৌচাগারটি বাইরে ছিল। আর সেটি ডুবে ছিল বন্যার পানিতে। এর ফলে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় ২০১৭ সালের বন্যায় ৪৮০টি কমিউনিটি ক্লিনিক পানিতে ডুবে ছিল। ওই সময় স্থানীয় নারীরা বাজার থেকে স্যানিটারি সামগ্রী ও প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে পারেননি। ফলে তাঁদের নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। একই ধরনের পরিস্থিতি উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের সময় ও পরে দেখা গিয়েছিল।
প্রতিবেদনে ঢাকা শহরের পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে বলা হয়, শহরটিতে মোট বস্তি রয়েছে পাঁচ হাজারটি। এখানকার বাসিন্দাদের বড় অংশই দেশের বিভিন্ন স্থানে জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার। বস্তিতে নারীদের প্রয়োজনীয় গোসলখানা নেই। শৌচাগারগুলোতে লেগে থাকে দীর্ঘ লাইন। অনেক ক্ষেত্রেই তাদের যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আকতার মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ঢাকামুখী মানুষের ঢল কমাতে আমাদের মাঝারি শহরগুলোকে প্রস্তুত করতে হবে।’
প্রতিবেদনে সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ জলবায়ু নিয়ে বিশেষ অধিবেশনে বাংলাদেশকে সোচ্চার হতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনে নিজেদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরতে হবে। কারণ, বাংলাদেশ অন্যতম ভুক্তভোগী রাষ্ট্র।
আঞ্চলিক পর্যায়ে অভিন্ন নদী অববাহিকাগুলোর ব্যবস্থাপনার জন্য চীন ও ভারতের সঙ্গে বসে আলোচনার ভিত্তিতে পানিবণ্টন সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পানি পাওয়ার ন্যায্য হিস্যার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশ সরকারের জন্য দেওয়া পরামর্শে বলা হয়, নিজ দেশে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য আরও বিস্তৃতভাবে ও বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে সমস্যাগুলোর সমাধান করে, এমন পদক্ষেপের দিকে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা পরিকল্পনা ও উদ্যোগ রাখতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কত মানুষ ঘরছাড়া হচ্ছে, তা তদারক ও পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেসব দুর্যোগ বাড়ছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান দরকার। যাতে আমরা বিশ্বদরবারে তা তুলে ধরে এসব পরিস্থিতি মেকাবিলায় আন্তর্জাতিক তহবিল জোগাড় করতে পারি।’