পাহাড়–টিলা কাটা রোধে সিলেট জেলার পাহাড়–টিলা এলাকায় সার্বক্ষণিক তদারকি ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সিলেটের জেলা প্রশাসক, সিটি করপোরেশনের মেয়র, পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগের উপপরিচালকসহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে ছয় মাস পরপর আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ আদেশ দেন।
‘সিলেটে টিলা কাটা চলছেই, আড়াই দশকে সাবাড় ৩০ শতাংশ’ শিরোনামে গত ১১ মার্চ প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটিসহ সিলেটে টিলা কাটা নিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার সংগঠন জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান মিলন চলতি মাসে রিট করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
পরে আইনজীবী মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সিলেটে পাহাড়–টিলা কাটা বন্ধে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দেশের পাহাড়–টিলা রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ও জনস্বার্থ পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সিলেটে টিলা কাটা চলছেই। ব্যক্তিমালিকানাধীন টিলা যেমন কাটা হচ্ছে, তেমনি খাস বা বন বিভাগের মালিকানাধীন টিলাও কাটা হচ্ছে। টিলা কাটায় পিছিয়ে নেই সরকারি সংস্থাও। কী পরিমাণ টিলা সিলেটে ছিল, এর সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান কোথাও নেই। তবে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সিলেট বিভাগের চার জেলায় বর্তমানে ১ হাজার ৮৭৫টি টিলা আছে। এসব টিলার আয়তন ৪ হাজার ৮১১ একর। এর বাইরে আড়াই দশকে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ টিলা কেটে ফেলা হয়েছে। ২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট সদর উপজেলার নালিয়া বাঘমারা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি টিলার বেশ খানিকটা অংশ কেটে প্রায় সমতল করে ফেলা হয়েছে। নির্মাণ করা হচ্ছে আধা পাকা একটি ঘর। ঘরের মালিক কে? এমন প্রশ্নের জবাব দিতে চাননি দুজন শ্রমিক। নির্মাণাধীন ঘরের পাশে টিলা কেটে আরও একাধিক প্লট তৈরির কাজ চলছে।