কুয়াশার চাদর আরও ঘন হচ্ছে, ঢাকায়ও শৈত্যপ্রবাহের শঙ্কা

ঘন কুয়াশার মধ্যে নৌযান চালাতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে চালকদের। দুপুরে পোস্তগোলা এলাকায়
ছবি: দীপু মালাকার

পাঁচ দিন ধরে ভারতের দিল্লি থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিশাল এক ঘন কুয়াশার স্তর চাদরের মতো আটকে আছে। প্রায় প্রতিদিনই ওই কুয়াশা ঘন হচ্ছে, ফলে রোদ এই অঞ্চলগুলোর ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে পারছে না। অন্যদিকে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে আসা শীতল বায়ুর একটি প্রবাহ দিন দিন শক্তিশালী বা ঠান্ডা হচ্ছে। এই দুইয়ের প্রভাবে বাংলাদেশে আজ শনিবার শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। আগামীকাল রোববারও একই ধরনের শীত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ বলছে, আজ দেশের অন্তত ১৬টি জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। দেশের বেশির ভাগ এলাকায় গতকাল শুক্রবারের তুলনায় আজ দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য আরও কমে এসেছে। ফলে শীতের অনুভূতি আরও বেড়েছে।

মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পাশাপাশি রাজধানীতে সারা দিন ছিল ঘন কুয়াশা। তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা, ৭ জানুয়ারি

ঘন কুয়াশার কারণে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় সূর্যের আলোর দেখা পাওয়া যায়নি। রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় শৈত্যপ্রবাহের কাছাকাছি নেমে এসেছে। ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোর মধ্যে ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শেরপুরে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহীনুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গত কয়েক দিনের মতো আগামীকালও দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে তীব্র শীত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে রোদ আসতে না পারায় তাপমাত্রা বাড়ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, কুয়াশা কাটলে শীত কমে আসবে।

শীতের তীব্রতায় গামছা মুড়িয়ে উষ্ণতা পাওয়ার চেষ্টা। লালকুঠি ঘাট এলাকা

আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, সাধারণত ভূখণ্ডের কাছাকাছি এলাকা থেকে যত ওপরে ওঠা যাবে, তাপমাত্রা তত কমতে থাকে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রতিদিন আকাশে বেলুনে একটি তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র ছেড়ে দিয়ে কোন স্তরের তাপমাত্রা কত, তা মাপা হয়। সাধারণভাবে প্রতি কিলোমিটার উঁচুতে উঠলে তাপমাত্রা পাঁচ থেকে সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমে আসে। কিন্তু দেশের ভেতরে আটকে থাকা কুয়াশার কারণে উল্টো ঘটনা ঘটছে। নিচের দিকে তাপমাত্রা কম ও ওপরে বেশি হচ্ছে। ফলে কুয়াশার পরিমাণ আরও বেড়ে যাচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতির কারণে শীতের দাপট প্রতিদিনই বাড়ছে।

আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া ফরিদপুর, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, দিনাজপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগের পাঁচ জেলার সব কটিতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।