কুয়াশার চাদর আজ ঢেকে রেখেছে রাজধানী ঢাকাকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত। দেশের অন্যত্রও বিস্তৃত এ চাদর। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এমন কুয়াশা আরও দু-তিন দিন থাকবে। তবে একটানা হয়তো থাকবে না। দুপুরের দিকে কিছু জায়গায় রোদের ঝিলিক দেখা যেতে পারে। দু-এক দিন পর আবার বেশি মাত্রায় কুয়াশা দেখা দিতে পারে। প্রাকৃতিক দুটি শর্ত পূরণ না হওয়ায় দ্রুত এ কুয়াশা কাটার সম্ভাবনা নেই।
দেশে গত দুই দিন শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও শীতের তীব্রতা ছিল বেশ। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, তাপমাত্রার তুলনায় শীত বেশি অনুভূত হওয়ার কারণ উত্তরের হিমেল বাতাস। দেশজুড়ে এমন বাতাস বইতে পারে আরও কয়েক দিন। সেই সঙ্গে আজ বুধবার দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসতে পারে। তবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারের টেকনাফে, ২৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে, ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের ২৪ ঘণ্টায়ও শ্রীমঙ্গলে ছিল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ প্রথম আলোকে আজ বলছেন, এ সময় দুটি কাঙ্ক্ষিত শর্ত পূর্ণ না হওয়ায় কুয়াশা কাটছে না। এর একটি হলো, পশ্চিমা লঘুচাপের ফলে বৃষ্টি হচ্ছে না। আরব সাগর থেকে আর্দ্রতা বহন করে নিয়ে এসে এ বৃষ্টি হয়। হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলে তাতে জলীয় বাষ্প চলে যায় এবং কুয়াশা দূর করতে পারে। এতে রাতের তাপমাত্রা কমে গেলেও দিনের তাপ বাড়ে।
দ্বিতীয়ত, ওপরের বাতাসের (জেট উইন্ড) নিম্নগামী হওয়া। সাধারণত ভূপৃষ্ঠ থেকে ১২ থেকে ১৮ হাজার ফুট ওপর দিয়ে এ হাওয়া বয়ে যায়। ঘণ্টায় এটি ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যায়। এটি নিচে নেমে এসে প্রচণ্ড বাতাস সৃষ্টি করলে তার ধাক্কায় জলীয় বাষ্প সরে যায়। কিন্তু সেটিও এখন হচ্ছে না। তাই কুয়াশাও কাটছে না।
এখন যে কুয়াশা হচ্ছে, তা স্থানীয়ভাবে সৃষ্টি ও তা তাপমাত্রার তারতম্যের জন্যই হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, এর আরেকটি উৎস হচ্ছে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে বয়ে আসা কুয়াশা। এটি পুরো গঙ্গা অববাহিকা দিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস অনুযায়ী, ডিসেম্বরে সারা দেশে গড় তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। চলতি জানুয়ারিতেও দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকতে পারে। তবে দেখা যেতে পারে শৈত্যপ্রবাহ।