দখল ও দূষণের কারণে বালু নদসহ ঢাকার চারপাশের নদ–নদী দিনদিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। জনবসতির সামনে থাকা নদী এখন জনবসতির পেছনের অংশ হয়ে গেছে। তাই দূষণ প্রতিরোধ করে নদীসম্পদ রক্ষায় আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
আজ শনিবার দুপুরে দূষণমুক্ত নদীর দাবিতে খিলগাঁওয়ের ইটাখোলা ও ত্রিমোহনীতে বালু নদ উৎসব ২০২২ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা এমন অভিব্যক্তি জানিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম এবং বারোগ্রাম বালু নদ মোর্চার যৌথ উদ্যোগে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল উৎসবের প্রেক্ষাপট আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, বালু নদসহ ঢাকার চারপাশের নদী দখল ও দূষণের কারণে দিনদিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। নদী হয়ে পড়েছে জনবসতির পেছনের অংশ। নদী যেন আবার জনবসতির সম্মুখভাগে আসে, তাই নদীকে তার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, পরিবেশ নিয়ে সচেতন ও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে—এমন সংগঠনগুলোর কারণে আজ পরিবেশ আন্দোলন বৈঠকখানার আলোচনা থেকে মাঠপর্যায়ের কার্যক্রমে পরিণত হয়েছে। জনগণের প্রচেষ্টা এবং সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে দূষণমুক্ত পরিবেশ, নদী ও বায়ু ফিরে পাওয়া যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উৎসবের উদ্বোধনী পর্বের সভাপতি বিশিষ্ট সমাজকর্মী খুশি কবির বলেন, নদীর নিজস্ব গতি আছে। ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থে নদী দখল ও দূষণ করে এর প্রবাহ বাধা দিয়ে কোনো লাভ নেই, বরং তাতে পরিবেশের ক্ষতি। তাই পরিবেশ রক্ষা করে জনগণের সুবিধার্থে নীতি প্রণয়ন করা উচিত।
বালু নদ মোর্চার আহ্বায়ক সুরুজ মিয়া বলেন, ‘ঢাকা শহরের বর্জ্যের কারণে এই বালু, দেবধোলাই ও নড়াই নদ ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই নদীদূষণ প্রতিরোধ করে দূষণমুক্ত নদী গড়া ও নদীসম্পদ রক্ষা করার প্রত্যয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবীর, ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম শহীদ উদ্দীন, কাউন্টার পার্ট ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি মাইনুদ্দিন আহমেদ, রিভার অ্যান্ড ডেলটা রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মাদ এজাজ, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়নকেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ।
উৎসবের পরবর্তী অংশে লাঠিখেলা ও বালিশ নিক্ষেপ খেলার আয়োজন করা হয় এবং বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এরপর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উৎসব শেষ করা হয়।