‘হাইড্রো এসওএস বাংলাদেশ ও নেপাল (বেন-ই)’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত কর্মশালায় বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
‘হাইড্রো এসওএস বাংলাদেশ ও নেপাল (বেন-ই)’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত কর্মশালায় বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

মানবিক কারণেই উজানের দেশগুলোর উচিত পানি ও নদীর সঠিক তথ্য জানানো: রিজওয়ানা হাসান

অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, মানবিক কারণেই উজানের দেশগুলোর উচিত বাংলাদেশের সঙ্গে পানির এবং নদী–সংক্রান্ত সঠিক ও সময়োপযোগী তথ্যগুলো জানানো। বাংলাদেশের বেশির ভাগ দুর্যোগের সঙ্গে পানি ও নদীর সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাই এসব তথ্য না পেলে দুর্যোগ মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়ে।

আবহাওয়া–জলবায়ু–পানি–সংক্রান্ত সেবার মান উন্নয়নের জন্য ‘হাইড্রো এসওএস বাংলাদেশ ও নেপাল (বেন-ই)’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন উপলক্ষে আয়োজিত কর্মশালায় কথাগুলো বলেন তিনি। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে এ কর্মশালা হয়। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড মিলে এ কর্মশালার আয়োজন করে।

কর্মশালায় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশে আন্তসীমান্ত নদী রয়েছে ৫৭টি, এর মধ্যে একটি দেশের (ভারত) সঙ্গেই রয়েছে ৫৪ নদী। বাংলাদেশে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় থেকে শুরু করে নানা ধরনের দুর্যোগের সঙ্গে পানি বা নদীর বিষয়টি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমরা এখন সাম্প্রতিক বন্যার ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করে যে পানি ও নদী–সংক্রান্ত তথ্যগুলো যদি উজানের দেশগুলো থেকে সঠিকভাবে পাওয়া যায়, তবে অনেক ধরনের দুর্যোগের ক্ষতি কমানো সম্ভব। আমরা হয়তো দুর্যোগ পুরোপুরি রোধ করতে পারব না; কিন্তু অন্তত ক্ষতিটা কমাতে পারি। আর তা কমাতে হলে উজানের দেশগুলোর কাছে থেকে পানি ও নদী–সংক্রান্ত সঠিক তথ্য সঠিক সময় জানতে হবে। বৃষ্টি কতটা হচ্ছে, কী পরিমাণ হচ্ছে, বাঁধগুলো খুলে দেওয়া হবে কি না—এ–সংক্রান্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিক তথ্য বাংলাদেশকে জানতে হবে। এ জন্য উজানের দেশগুলোর দায়িত্ব রয়েছে। তারা যদি এসব তথ্য সঠিকভাবে দেয়, তবে আমাদের পক্ষে দুর্যোগ ও ক্ষতি অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।’

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করছি। এর প্রভাব শুধু একটা দেশের ওপর সীমাবদ্ধ নয়, এর বৈশ্বিক প্রভাব রয়েছে। তাই বৈশ্বিকভাবে এর মোকাবিলা করতে হবে। এ অঞ্চলের দেশগুলো সহযোগিতা তাই একান্ত দরকার।’

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মেকাবিলায় উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা পাওয়া যায় না। বাংলাদেশের মতো দেশগুলো, যেগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ক্ষতি গুনছে, তাদের সহযোগিতা পাওয়ার অধিকার আছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আশরাফ উদ্দিন কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার হাউরিন কিম, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. ছাদেকুল আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন।