ইলিশ মাছ
ইলিশ মাছ

ভোলায় দুই নদীতে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ভোলায় মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকা ২টি অভয়াশ্রমে শুরু হচ্ছে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা।

আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টায় (১ মার্চ) এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে, চলবে টানা দুই মাস।

ভোলার চর ইলিশা থেকে চর পিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার এবং ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম পর্যন্ত তেতুঁলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ইলিশের অভয়াশ্রম। ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত—দুই মাস এই দুটি অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।

মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, এ আইন অমান্য করলে কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড হতে পারে। সেই সঙ্গে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।

অভয়াশ্রমে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকার সময়ে মাছ ধরা বন্ধে প্রচার চালাচ্ছে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ। মৎস্যজীবীদের নিয়ে সভা করার পাশাপাশি ব্যানার টানানো হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করা হচ্ছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে মা ইলিশ নদীতে ডিম ছেড়েছে। সেসব ডিম ফুটে যেসব বাচ্চা হয়েছে, তা এখন জাটকা পর্যায়ে। মার্চ ও এপ্রিল—এই দুই মাস যদি আমরা এসব জাটকা ধরা বন্ধ রাখি, তাহলে তা পূর্ণ ইলিশে রূপ নেবে। তাই সরকার এই দুই মাস মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর অভয়াশ্রমে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এতে ইলিশের উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি অন্যান্য মাছও বাড়বে।’

ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের মেঘনাপারের বাসিন্দা মাহবুব মাঝি, সাখাওয়াত মাঝি ও হাসেম আলী বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত শুরুর দিকে অনেক মৎস্যশিকারি না মানলেও এখন প্রায় সবাই মানছেন। কারণ, এর ফলে মৎস্যশিকারিরাই লাভবান হচ্ছেন।

স্থানীয় মৎস্যশিকারি ফরিদ হোসেন বলেন, কয়েক বছর ধরে মেঘনা নদীতে ইলিশের পাশাপাশি প্রচুর পাঙাশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। তাই তাঁরাও চান, অভয়াশ্রমে সব ধরনের মাছের সংখ্যা বাড়ুক।

নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে রাত ১২টার পর থেকে দুটি অভয়াশ্রমে রাত-দিন অভিযান চালানো হবে। অভিযানে মৎস্য বিভাগের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, র‌্যাব, নৌ পুলিশ কাজ করবে।

মৎস্য বিভাগ বলছে, গত বছরের ১ নভেম্বর শুরু হয়ে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৮ মাসের জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জাটকা শিকার থেকে মৎস্যশিকারিদের বিরত রাখতে ফেব্রুয়ারি থেকে মে—এই ৪ মাস জেলার ৮৯ হাজার ৬০০ জেলে পরিবারকে ৪০ কেজি করে চাল দিচ্ছে সরকার।