বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে আজ বৃহস্পতিবার গভীর রাতেই। এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘মিধিলি।’ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান আজ প্রথম আলোকে বলেছেন, এটি বাংলাদেশের দিকেই আসছে। তবে এটি খুব বড় মাত্রার ঘূর্ণিঝড় হবে না বলেই ধারণা করছেন তাঁরা।
আজিজুর রহমান বলেন, এখন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি আজ গভীর রাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। আগামীকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে বা শনিবার ভোরে এটি বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
গত ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে। এতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে প্রাণহানি এবং বসতবাড়ি ও ফসলও নষ্ট হয়। এরপর আবার নতুন আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার কথা জানাল আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, আগামীকাল দিবাগত রাতে বা ভোরে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। পটুয়াখালীল খেপুপাড়া থেকে চট্টগ্রামের উপকূল—এর মাঝ বরাবর এটি চলে যাবে। ভোলা জেলার দিকেই এর মূল অংশ যেতে পারে।
নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলেও এটি খুব বড় আকারের হবে না বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদ আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এটি ছোট আকারের ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। তবুও এর মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিতে আমরা আজ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সঙগে বসব।’
আজ আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা গভীর নিম্নচাপটি আরো উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।
গভীর নিম্নচাপটির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের উপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী ( ৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে থাকা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে অতি দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।