বিশ্বের ১২৫ নগরীর মধ্যে আজ মঙ্গলবার সকালে বায়ুদূষণে দ্বিতীয় স্থানে ঢাকা। আজ সকাল ৮টায় আইকিউএয়ার মানসূচকে ঢাকার বায়ুর মান ২১৬। বায়ুর এই মানকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গতকাল সোমবার ও আগের দিন গত রোববার ঠিক এ সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগরী ছিল ঢাকা।
রোববার সকালে ঢাকার বায়ুর মান ছিল ৪৫২, পরে তা আরও বেড়েছিল। বায়ুর মান ৩০০-এর বেশি হলেই তাকে দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করা হয়। রোববার ঢাকার দূষিত ১০টি স্থানের প্রতিটির মানই ছিল দুর্যোগপূর্ণ। এর মধ্যে গুলশানের দুটি স্থানের স্কোর ছিল ৭০০-এর ওপর।
বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে। সেই সতর্কবার্তায় নগরবাসীর উদ্দেশে আইকিউএয়ারের পরামর্শ, বাইরে বের হলে সুস্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।
যদি কোনো অঞ্চলে পরপর ৩ দিন ৩ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বাই রোমান ৩০০-এর বেশি থাকে বা দুর্যোগপূর্ণ থাকে, তবে সেই অঞ্চলে স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা জারি করা দরকার বলে মনে করেন পরিবেশবিদেরা।
গত ডিসেম্বরের একটি দিনও নির্মল বায়ু পায়নি রাজধানীবাসী। দূষণসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ক্যাপসের এক জরিপে দেখা গেছে, ডিসেম্বরে যত বায়ুদূষণ ছিল, তা গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ।
ক্যাপসের গবেষণায় দেখা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে বায়ুর গড় মান ছিল ২৮৮। ২০১৬ থেকে এত খারাপ কখনোই হয়নি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বায়ুর মান ছিল ১৯৫। গত ৯ বছরে ডিসেম্বর মাসে ঢাকার বায়ুর মান ছিল ২১৯ দশমিক ৫৪। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এই মান ৩১ ভাগের বেশি বেড়ে গেছে। আর ২০২৩ সালের তুলনায় বেড়েছে ২৬ ভাগের বেশি।
আজ বিশ্বে বায়ুদূষণে ২৫৯ স্কোর নিয়ে প্রথম অবস্থানে আছে ভিয়েতনামের হ্যানয়।
আজ দেশের অন্য বিভাগীয় শহরের মধ্যে চট্টগ্রামের বায়ুর মান ৯৬, রাজশাহীতে ১৭৫ আর খুলনায় ১৬৬। আশপাশের তিনটি সর্বোচ্চ দূষিত এলাকার মধ্যে আছে, গুলশান-২-এর রব ভবন (২৮৬), কল্যাণপুর (২৮৫) ও ঢাকার মার্কিন দূতাবাস এলাকা (২৮৫)।
ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি। আজ ঢাকার বাতাসে এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানমাত্রার চেয়ে ২৮ গুণ বেশি।
আজ বায়ুদূষণের যে অবস্থা, তা থেকে রক্ষা পেতে আইকিউএয়ারের পরামর্শ, ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। খোলা স্থানে ব্যায়াম করা যাবে না। আরও একটি পরামর্শ, ঘরের জানালা বন্ধ রাখতে হবে।