আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে দেশের ২০ জেলায় বন্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে। দেশের চারটি নদী অববাহিকায় একযোগে পানি বাড়তে পারে। এতে আগামী এক সপ্তাহ টানা বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। এরপর পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা আছে। সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।
এদিকে গতকাল রোববার দেশের ১৬টি জেলায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। বেশির ভাগ নদ-নদীর পানি বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর ৯৩টি পয়েন্টের মধ্যে ৭৩টি পয়েন্টে পানি বাড়ছে, এর মধ্যে ২৫টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এসব নদীর পানি প্রতিদিন তিন থেকে চার ইঞ্চি বাড়ছে।
অন্যদিকে দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে তুমুল বৃষ্টির কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুরসহ বেশির ভাগ বড় শহরে তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়ক পানিতে ডুবে গিয়ে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
এ ব্যাপারে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের উজানে ভারতীয় অংশে ও বাংলাদেশের ভেতরেও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে বন্যার পানি আগামী কয়েক দিন দ্রুত বাড়তে পারে। চলমান বন্যা আরও এক সপ্তাহ ধরে বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সোমবারও দেশের বেশির ভাগ এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের বেশির ভাগ স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। আর ঢাকা ও বরিশালের অর্ধেকেরও বেশি এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা আছে।
>গতকাল পর্যন্ত দেশের ১৬ জেলায় বন্যার পানি ঢুকেছে
বেশির ভাগ নদ-নদীর পানি বেড়েছে
নদ-নদীর ৯৩ পয়েন্টের মধ্যে ৭৩ পয়েন্টে পানি বাড়ছে
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, কাল মঙ্গলবার থেকে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় বৃষ্টি কমে আসতে পারে। দুই-তিন দিন বিরতি দিয়ে আবারও বৃষ্টি শুরু হতে পারে।
এদিকে প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা জানান, কুষ্টিয়া, জামালপুর, নীলফামারী, ময়মনসিংহ, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নেত্রকোনা, সিরাজগঞ্জ, কক্সবাজার, বান্দরবান, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম ও রাঙামাটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ জেলায় প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এসব জেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
নীলফামারী জেলায় তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। শনিবার তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও রোববার তা কমে ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় মাওনা চৌরাস্তা পানিতে তলিয়ে যেতে দেখা গেছে। ফলে ঢাকা গাজীপুর ও ময়মনসিংহগামী বেশির ভাগ যানবাহন চলাচল প্রায় স্থবির হয়ে যায়। গোটা এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।