উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের ডিহিবুড়া খাল এলাকার কৃষিকাজের প্রাণ। স্থানীয় লোকজন খালটি ব্যবহার করতে না পারলে কৃষিকাজও ব্যাহত হবে।
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের ২২ নম্বর পোল্ডারটি (চারদিকে নদীবেষ্টিত দ্বীপ) ১৩টি গ্রাম নিয়ে গঠিত। ওই গ্রামগুলোর মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে ডিহিবুড়া নামের একটি ছোট খাল। আশপাশের নদীগুলোতে সাগরের লোনাপানি থাকলেও খালটি খনন করে তাতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। আর এ কারণে পুরো ইউনিয়নের মধ্যে শুধু ওই গ্রামগুলোতে রয়েছে ভিন্ন চিত্র। খালের মিঠাপানি দিয়ে ফসল ফলাতে পারেন গ্রামগুলোর কৃষকেরা।
তিন বছরের বেশি সময় ধরে খালটি ইজারা দেওয়া হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি খালটি আবার ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর এ খবর শুনেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। গত রোববার তাঁরা খালটি ইজারা না দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন। গণস্বাক্ষরের মাধ্যমে এলাকাবাসীর দাবিসংবলিত একটি চিঠি জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২২ নম্বর পোল্ডারের মধ্যে রয়েছে ওই ইউনিয়নের ৫টি ওয়ার্ড। পোল্ডারটির মোট আয়তন ১ হাজার ৪১৭ হেক্টর। পোল্ডারের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ডিহিবুড়া খালটির দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর ডেলটা প্ল্যানের আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ১ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে খালটি খনন করে। খালের সংরক্ষিত মিঠাপানি ব্যবহার করে এলাকার শত শত কৃষক তরমুজ, ধান, ভুট্টাসহ অর্থকরী ফসল উৎপাদন করেন। জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে গত ৩ বছর খালটির ইজারা দেওয়া বন্ধ ছিল।
ওই খাল ইজারা দেওয়ার জন্য কোনো চিঠি এখনো পাইনি। চিঠি এলে জনগণের চাহিদার কথা জানিয়ে দেওয়া হবেএ বি এম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী, ইউএনও, পাইকগাছা
দেলুটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিপন কুমার মণ্ডল বলেন, ডিহিবুড়া খালটি ওই পোল্ডারের প্রাণ। আশপাশে লোনাপানির প্রভাব থাকলেও শুধু খালটির কারণেই ওই পোল্ডারে কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে। সম্প্রতি একটি মহল খালটি ইজারা নেওয়ার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে খালটি ইজারা দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে উপজেলায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। আর এই খবর শুনেই এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। খালটি ইজারা দেওয়া হলে লোনাপানির প্রভাবে এলাকার কৃষিকাজ বাধাগ্রস্ত হবে।
খাল ইজারা দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, ওই খাল ইজারা দেওয়ার জন্য কোনো চিঠি তিনি এখনো পাননি। তবে যদি জেলা থেকে ওই সংক্রান্ত কোনো চিঠি উপজেলায় আসে, তাহলে জনগণের চাহিদার কথা জানিয়ে দেওয়া হবে। মানুষ না চাইলে ওই এলাকার কোনো খাল ইজারা দেওয়া হবে না বলে জানান ইউএনও।