তিন বছরে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৯ শতাংশ। বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনটিতে বাঘের সংখ্যা ১১৪ টি। গত বছর পরিচালিত জরিপে এ তথ্য পাওয়া গেছে। তিন বছর আগে বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৬ টি। সময়োপযোগী তৎপরতার মাধ্যমে এ সংখ্যা আরও বাড়াতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
আজ বুধবার দুপুরে আগারগাঁও বন ভবনে সুন্দরবনের বাঘ জরিপের ফলাফল প্রকাশ করতে গিয়ে এমন আশাবাদের কথা জানান মো. শাহাব উদ্দিন। তিনি বলেন, বাঘের সংখ্যা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা হয়েছে। বাঘ রক্ষার জন্য ২০১০ সালে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে এক সম্মেলনে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাঘ আছে এমন দেশগুলো ও সম্মেলনে অংশ নেয়।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, এর আগে সর্বশেষ ২০১৫ সালে ঘোষিত জরিপের ফলে বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৬ টি। এবার মার্কিন সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির আর্থিক সহযোগিতায় দেশীয় বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় বাঘ জরিপ পরিচালনা করেছে বন বিভাগ। যৌথভাবে এ জরিপে কাজ করেছে বন বিভাগ, বেসরকারি সংস্থা ওয়াইল্ড টিম ও যুক্তরাষ্ট্রের স্মিথসোনিয়ান কনজারভেশন বায়োলজি ইনস্টিটিউট। তথ্য বিশ্লেষণ ও প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
বন বিভাগ বলছে, ২০১৬ সালে শুরু করে ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত চারটি ধাপে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা, খুলনা ও শরণখোলা রেঞ্জের তিনটি ব্লকের এক হাজার ৬৫৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় বিশেষ এক ধরনের ক্যামেরা ব্যবহার করে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ২৪৯ দিনব্যাপী পরিচালিত এ জরিপ কার্যক্রমে ৬৩টি পূর্ণবয়স্ক বাঘ, ৪টি জুভেনাইল বাঘ এবং ৫টি অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাঘের প্রায় আড়াই হাজার ছবি পাওয়া যায়। এসব ছবি বিশ্লেষণ করে বাঘের ওই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। সুন্দরবনে বাঘের বিচরণ ক্ষেত্র চার হাজার ৪৬৪ কিলোমিটার এলাকাকে আপেক্ষিক ঘনত্ব দিয়ে গুণন করে বাঘের সংখ্যা হিসাব করা হয়েছে ১১৪ টি। ব্লক অনুযায়ী বাঘের ঘনত্ব বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, শরণখোলা রেঞ্জে বাঘের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি এবং খুলনা রেঞ্জে বাঘের ঘনত্ব সবচেয়ে কম।
প্রধান বন সংরক্ষক সফিউল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী।