তিন সহযোগী নিয়ে গত শনিবার গণি মিয়া মেঘনায় নৌকা ভাসান। তাঁর বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবের জগন্নাথপুর এলাকায়। উদ্দেশ্য, বড়শি দিয়ে বোয়াল মাছ ধরা। কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মেঘনা মোহনার সোনরামপুর এলাকায় বড়শিতে পুঁটি মাছ দিয়ে টোপ পাতেন। একপর্যায়ে বড়শিতে হ্যাঁচকা টান পড়ল। টোপ গিলেছে বড় কিছু—এমন ধারণা সবার। ধীরে ধীরে বড়শি ওপরে আনার পর ভেসে উঠল বিশাল আকারের একটি শাপলা পাতা মাছ।
এবার সবার চোখ ছানাবড়া। কোনোভাবে মাছটিকে বড়শিতে আটকে রাখা যাচ্ছে না। তাদের সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসেন আরও কয়েকজন জেলে। শেষে ফলা দিয়ে আঘাত করে মাছটিকে দুর্বল করা হয়। ৩০ মিনিটের চেষ্টায় মাছটিকে তীরে ওঠানো হয়। মেপে দেখা গেল এর ওজন প্রায় সাত মণ।
গণি মিয়া মেঘনায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।
এর আগে গত বছরের ১৫ নভেম্বর একই এলাকায় সাত মণ ওজনের আরও একটি শাপলা পাতা মাছ ধরা পড়েছিল।
স্থানীয় জেলেরা জানান, ওই দিন সন্ধ্যায় মাছটি বিক্রির জন্য প্রথমে নেওয়া হয় আশুগঞ্জ আড়তে। সেখানে বিক্রি করা যায়নি। এরপর রাত ৮টার দিকে নেওয়া হয় ভৈরব নৈশ মৎস্য আড়তে। নদীয়া মৎস্য আড়তের মালিক মাছটি ৪৫ হাজার টাকায় কিনে নেন। পরে তিনি মাছটি কেটে টুকরা করে বিক্রি করেন। মাছটি দেখতে আড়তে ভিড় জমিয়েছিল উৎসুক জনতা।
গণি মিয়া বলেন, ‘প্রথমে মনে হয়েছে বড় আকারের বোয়াল আটকাইছে। বেশি জোর করতাছে। তখন মনে হইল বোয়াল না। শাপলা পাতা মাছ হইতে পারে, এমন ধারণা আছিল না।’ তাঁর সহযোগী কাজল মিয়া বলেন, ‘মাছটি দেখার পর মনে অনেক আনন্দ হইছে। আবার ডরও লাগতাছিল। না জানি ছুইটা যায়! তুইলা আনতে অনেক কষ্ট হইছে।’
ভৈরব নৈশ মৎস্য আড়ত সমবায় সমিতির সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, একসময় মেঘনায় প্রায় প্রতিদিন শাপলা পাতা মাছ ধরা পড়ত। এখন বছরে একটি কি দুটির বেশি এই মাছের দেখা মেলে না।