ঋতুচক্রের হিসাবে বর্ষা আসে জুনের একেবারে শুরুতে। অনেক সময় মে মাসেও চলে আসে দেশের সবচেয়ে বড় এই ঋতু। কিন্তু এবার বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়েছিল একটু দেরিতে। ২০ জুনে এসে বর্ষা সক্রিয় হয়, যার রেশ এখনো চলছে। আগামী দুই-তিন দিন থেমে থেমে বৃষ্টি চলতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের বর্ষা যে শুধু দেরিতে এসেছে ও বিদায় নিচ্ছে তা নয়। গত ১৫ বছর বর্ষার আসা–যাওয়া দেরিতেই হচ্ছে। বর্ষার সময়কাল ১০ থেকে ১৫ দিন সরে যাচ্ছে। এর প্রভাবে আমন, আউশ ও সবজির উৎপাদনে প্রভাব পড়ছে। অসময়ের বৃষ্টির ফলে অনেক স্থানে এসব ফসলের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যা ও পানি ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে বর্ষার সময়কাল আমরা ১৫ দিন সরে যেতে দেখছি। আগে মে মাসের শেষের দিকে বর্ষা শুরু হতো। আর শেষ হতো সেপ্টেম্বরের শেষে এসে। এখন দেখছি বর্ষা শুরু হতে জুনের মাঝামাঝি সময় লেগে যাচ্ছে। আর শেষ হতে অক্টোবর পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে।’
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে চলতি অক্টোবর মাসের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে। তবে বঙ্গোপসাগরে এই মাসে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা আছে। আর গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে। রংপুরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
>বর্ষার সময়কাল ১০ থেকে ১৫ দিন সরে যাচ্ছে
আমন, আউশ ও সবজির উৎপাদনে প্রভাব পড়ছে
আগামী দুই-তিন দিন থেমে থেমে বৃষ্টি চলতে পারে
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আজ মঙ্গলবারের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজও দেশের সব বিভাগের কিছু কিছু স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। কয়েকটি স্থানে মাঝারি বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। আগামী দুই-তিন দিন এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে দিন ও রাতের তাপমাত্রা একই রকম থাকার সম্ভাবনা আছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, এবার বর্ষা আসতে দেরি হয়েছে। তবে এটি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে একটু বেশি সময় নিয়ে বিদায় নিচ্ছে। এটি এখনো দেশের বেশির ভাগ স্থানে সক্রিয় আছে। আগামী কয়েক দিন বৃষ্টি হতে পারে।