বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর খবর বেশি আসছে। তার মানে এটা বলা যাবে না যে দেশে বজ্রপাত বেড়েছে। বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পর এই মৃত্যুর ঘটনাগুলো গণমাধ্যমে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এর আগেও বজ্রপাত প্রতিরোধে তালগাছ রোপণসহ যতগুলো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা খুব একটা কাজ করেনি। তাই নতুন যে প্রকল্পগুলো নেওয়া হচ্ছে, তাতে বজ্রপাতের সব ঝুঁকি বিবেচনায় নিতে হবে।
যেমন সরকার থেকে বলা হচ্ছে, মূলত হাওর এলাকাগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে বজ্রপাত আশ্রয়কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হবে। কিন্তু চলতি বছর আমরা দেখেছি, বজ্রপাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নৌকাযাত্রী ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নদী ও পুকুরে থাকা অবস্থায় অনেকে বজ্রপাতে মারা গেছে। তাহলে তাদের মৃত্যু আমরা ঠেকাব কীভাবে? এ ক্ষেত্রে অবকাঠামোভিত্তিক সমাধানের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানোর দিকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।
আমাদের দেশে বজ্রপাতের ঋতু ও এলাকাভিত্তিক ভিন্নতা আছে। যেমন বর্ষার আগের সময়টাতে দেশের হাওর এলাকায় বেশি বজ্রপাত হয়। বর্ষার সময় সারা দেশেই কমবেশি হয়, আর বর্ষার শেষে দেশের পাহাড়ি এলাকায় বেশি বজ্রপাত হয়। এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে প্রকল্পগুলো করা হয়েছে কি না, তা দেখতে হবে। সেটা না হলে আগের মতো অনেক টাকার অপচয় হবে। আর বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু থামানো যাবে না।
আশরাফ দেওয়ান, শিক্ষক ও বজ্রপাত গবেষক, কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়া