ঘূর্ণিঝড় ফণীর অগ্রভাগ আজ শনিবার ভোররাত থেকে বাগেরহাটে উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করে। এর প্রভাবে ঝোড়ো বাতাস বইছে বাগেরহাটে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে বাগেরহাটের উপকূল ও নদীতীরবর্তী এলাকার লোকজন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেন। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপকূলজুড়ে বাড়তে থাকে আতঙ্ক।
গতকাল দিবাগত রাত তিনটার পর থেকে শুরু হয় তীব্র ঝোড়ো বাতাস। ঘূর্ণিঝড় ফণীর মূল আঘাত থেকে রক্ষা পেলেও সকাল পর্যন্ত দমকা বাতাসে বাগেরহাটের বিভিন্ন স্থানে কাঁচা ও আধা পাকা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সারা রাত আশ্রয়কেন্দ্রে উৎকণ্ঠায় কেটেছে বাগেরহাটের উপকূলবর্তী শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপাল উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষের। দমকা বাতাস বইতে থাকায় এখনো আতঙ্ক কাটছে না এসব এলাকার লোকজনের। আর জোয়ারের সময় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা থাকায় উপকূলীয় এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে শিশু ও বৃদ্ধরা এখনো বাড়ি ফেরেনি।
বাগেরহাট সদরের কেবি মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী আইউব আলী প্রথম আলোকে বলেন, সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া অধিকাংশ জেলে দুর্যোগের সংকেত পেয়ে ফিরে এসেছেন। এখনো বাতাস হচ্ছে। সবাই আতঙ্কে আছে।
শরণখোলার বগী গ্রামের মাহাবুব হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বলেশ্বর নদের বেড়িবাঁধ ভেঙে ও উপচে বগীসহ আশপাশের গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আমরা সারা রাত আশ্রয়কেন্দ্রে ভয়ে ছিলাম। দমকা বাতাসে এলাকার গাছপালা ভেঙে গেছে। সকালে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরেছেন। তবে বৃদ্ধ ও শিশুরা এখনো ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে আছে।’
বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে উপকূলীয় বাগেরহাট জেলাজুড়ে রাতে তীব্র বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভোররাত থেকে ঝোড়ো বাতাস হলেও জেলার কোথাও বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। জেলার সুন্দরবনসংলগ্ন মোংলা, শরণখোলা, রামপাল, মোরেলগঞ্জ উপজেলা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা থাকায় লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় আশ্রয় নেওয়া লোকজনের খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাতে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে জেলার ১ লাখ ১৩ হাজার ২৫০ জন আশ্রয় নেয়। জানমালের ক্ষয়ক্ষতি যথাসম্ভব কমিয়ে আনতে জেলা প্রশাসন স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতা নিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
গতকাল গাছচাপায় সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের রঞ্জিতপুর গ্রামে মোজাহার হাওলাদারের স্ত্রী শাহানূর বেগমের (৫০) মৃত্যু হয়েছে।