ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সৃষ্ট প্রচণ্ড ঝড়ে গভীর রাতে চাঁদপুরের তিন উপজেলার শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় কমপক্ষে ১০ জন সামান্য আহত হন। আহত ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এলাকাবাসী জানায়, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটা থেকে আজ শনিবার ভোররাত পৌনে চারটা পর্যন্ত প্রচণ্ড বেগে বাতাসের সঙ্গে ঝড়ে তাঁদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান বলেছেন, ‘জেলায় এক রাতের ঘূর্ণিঝড়ে ১০০ ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাহায্য করা হবে।
চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের তিন গ্রামের ৫৬টি, হাইমচর উপজেলার হাইমচর ইউনিয়নে ১২টি ও মতলব উত্তরের জহিরাবাদ ইউনিয়নের ৩টি গ্রামে ৪০টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় এসব এলাকায় গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। নদী উত্তাল হওয়ায় সেখানে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও উদ্ধার তৎপরতা চালাতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও পৌঁছাতে পারছে না।
রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন জানান, সেখান কোনো আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় এই ঝড়ের সময় যে যাঁর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হজরত আলী ব্যাপারী জানান, ভোররাত পৌনে চারটার সময় ওই ইউনিয়নের শিলারচর, খাসকান্দি, মান্দের বাজার গ্রামের ওপর দিয়ে প্রচণ্ড বেগে বয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ে মানুষের ঘরবাড়ি, গাছপালা উড়ে যায়। তাঁর হিসাবে ৫০টি ঘর পুরোপুরি আর ছয়টি ঘর আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মতলব উত্তরের এখলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, তাঁর ইউনিয়নের চরাঞ্চলে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর হয়েছে। তাঁরা তালিকা তৈরি করছেন।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে মোবাইলে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের একটি তালিকা করতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছি। নদী উত্তাল থাকায় আমরা সেখানে যেতে পারছি না।’
হাইমচরের ইউএনও ফেরদোসী বেগম বলেন, ‘গভীর রাতের ঘূর্ণিঝড়ে হাইমচর ইউনিয়নে ১০ থেকে ১২টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’
হাজীগঞ্জের দেশগাঁও কলেজ ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন।