দেশের চারটি জেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে আজ মঙ্গলবার রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। এমন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ দু-এক দিন থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্র জানিয়েছে, পাবনা, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, যশোর ও রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে আজ দুপুরের পর থেকে মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলছে। এই শৈত্যপ্রবাহ কাল বুধবারও অব্যাহত থাকতে পারে। আজ মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে। বুধবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবদুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, এই সময়ে উপমহাদেশীয় বায়ুর উচ্চ চাপের বলয় দেশের পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে বিরাজ করছে। এ কারণে দেশে মৃদু বা মাঝারি গোছের শৈত্যপ্রবাহ বইছে।
আজ দেশের সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দেশের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৭ দশমিক ৩ সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকায় আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকলেও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
এদিকে রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ স্থানের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বায়ুমানেরও অনেকটা অবনতি হয়েছে। বায়ুদূষণের কারণে ঢাকার অবস্থা ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর। বায়ুদূষণের মাপকাঠিতে আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে সারা বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। বায়ুমান গবেষকেরা বলছেন, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় হিমালয় থেকে আসা বায়ু এই সময়ে শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে এই অঞ্চলের দেশগুলোর দিকে আসছে। সারা বছর থেকে জমে থাকা এসব বায়ু একই সঙ্গে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও চীনে ছড়িয়ে দূষণ বাড়াচ্ছে।
বৈশ্বিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে মানবদেহের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর উপাদান পিএম ২.৫ মিটারে ঢাকার স্কোর ২২৮। ঢাকার পরেই দ্বিতীয় অবস্থানে চীনের সেনইয়াং (১৯৬) ও তৃতীয় অবস্থানে ভারতের নয়াদিল্লি (১৮৫)।
বায়ুদূষণ প্রসঙ্গে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (কেপস) পরিচালক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, শীতকালে তাপমাত্রা কমার সঙ্গে বায়ুদূষণের একটা নিবিড় যোগাযোগ আছে। শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় এ সময় ধুলাবালুর দৌরাত্ম্য বাড়ে। কুয়াশার সঙ্গে সে ধুলাবালু মিলে ধোঁয়াশা তৈরি করে। এই ধোঁয়াশা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই খারাপ। এ সময় বায়ুতে থাকা ক্ষতিকর অণুজীবও সক্রিয় হয়। এ কারণে ফুসফুসসহ শ্বাসকষ্টজনিত রোগে মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ সময় মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেন আহমদ কামরুজ্জমান।