কয়রায় বাঁধ ভেঙে তিন গ্রাম তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা

বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী দুর্বল হয়ে পড়লেও আশঙ্কা কাটেনি খুলনার কয়রা উপজেলার গোবরা, ঘাটাখালী ও হরিণখোলা গ্রামের মানুষের। কপোতাক্ষ নদের পাড়ে দেওয়া বেড়িবাঁধ ভেঙে যেকোনো সময় এ তিন গ্রাম তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

কয়রা উপজেলার এই তিন গ্রামসহ আশপাশের বহু মানুষ এই বেড়িবাঁধের ওপর এখন অবস্থান করছেন। গতকাল শুক্রবার সারা দিন, সারা রাত এবং আজ শনিবার সকালে পাঁচ শতাধিক মানুষ প্রাণপণ চেষ্টা করে এই বেড়িবাঁধ আপাতত রক্ষা করেছেন। স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে তাঁরা মাটির বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষা করেছেন।

গ্রামবাসী আশঙ্কা করছেন, রাতে জোয়ার এবং বাতাসের তোড়ে এই বেড়িবাঁধের কোনো কোনো জায়গা ভেঙে যেতে পারে।

কয়রা খুলনা সদর থেকে সড়কপথে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে। ঘূর্ণিঝড় ফণীতে যে কয়টি জনপদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, এর মধ্যে কয়রা অন্যতম।

খুলনা-৬ আসনের (কয়রা-পাইকগাছা) সাংসদ আখতারুজ্জামান গত দুদিন এ এলাকায় অবস্থান করছেন। তিনি আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, বেড়িবাঁধ রক্ষার দায়িত্ব যাদের ছিল, তারা তা পালন করেনি।

গ্রামবাসীরা বাঁধ মেরামতের কাজ করছেন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

এই দায়িত্ব কাদের ছিল—প্রশ্ন করলে সাংসদ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় রাজনীতিবিদদের। বরাদ্দ যথেষ্ট থাকলেও তাঁরা সে দায়িত্ব পালন করেননি।

কয়রা উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম গতকাল সারা রাত স্থানীয় মানুষের সঙ্গে থেকে বেড়িবাঁধের কাজ তদারকি করেছেন এবং নিজেও অংশ নিয়েছেন। আজ সকাল থেকে তিনি দুর্গত এলাকায় আছেন।

সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিমুল কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলার সব ধরনের প্রস্তুতি উপজেলা পরিষদের আছে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত উপজেলার কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বেশ কয়েকটি এলাকার বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মধ্যে আছে।

গতকাল প্রস্তুতির বিষয়ে ইউএনও শিমুল কুমার সাহা জানিয়েছিলেন, ১২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ১১৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। সাতটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও থানা-পুলিশদের নিয়ে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। নিরাপদ পানি ও খাদ্য মজুত করা হয়েছে।