পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৩ জুন থেকে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল থেকে বিশেষ লঞ্চ চলাচল শুরু করবে। দক্ষিণাঞ্চলের ৪১টি রুটে চলাচলের জন্য ইতিমধ্যে শতাধিক লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে। তবে নৌপথে লঞ্চের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিনের অগ্রিম টিকিটের জন্য যাত্রীদের মধ্যে তেমন আগ্রহ নেই।
বিআইডব্লিউটিএর নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৩ জুন থেকে বিশেষ লঞ্চ চলাচল সার্ভিস শুরু হয়ে সেটি চলবে ২৩ জুন পর্যন্ত।
আজ শনিবার সকালে সদরঘাট টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, অগ্রিম টিকিটের জন্য দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের তেমন দেখা যায়নি। টার্মিনালের পন্টুনে ভেড়ানো লঞ্চগুলোতে গিয়ে কেউ তেমন অগ্রিম টিকিটের ব্যাপারে খোঁজ করছেন না। মাঝেমধ্যে দুয়েকজন এসে অগ্রিম টিকিটের ব্যাপারে লঞ্চের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলছেন।
রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে সুলতানা বেগম সদরঘাটে এসেছেন আগাম টিকিটের খোঁজ করতে। তিনি বলেন, ‘পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রতিবার গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদ্যাপন করি। তাই আগেভাগে অগ্রিম টিকিট নিতে এসেছি, যাতে টিকিটের সংকটে পড়তে না হয়। কিন্তু লঞ্চে গিয়ে জানতে পারি, এখনো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়নি। তারা জানায়, দুয়েক দিনের মধ্যে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হতে পারে।
রাজধানীর নিউমার্কেট থেকে আসা মঞ্জুর আলম বলেন, ‘ঈদ মৌসুমে অগ্রিম টিকিট পেতে অনেককে বেগ পেতে হয়। তাই আজ সদরঘাটে এসে অগ্রিম টিকিটের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়েছি। এ সময় এক লঞ্চের কর্মচারী জানান, মালিকপক্ষ অগ্রিম টিকিট বিক্রির বিষয়ে তাঁদের কিছু জানায়নি। তাই টিকিট না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। কিছুদিন পর আবার অগ্রিম টিকিটের জন্য আসব।’
বরিশালগামী এমভি পারাবত লঞ্চের কর্মচারী সালাম মিয়া বলেন, ‘লঞ্চের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির আগাম টিকিট বিক্রি এখনো শুরু হয়নি। কবে আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হবে, সে বিষয়ে মালিকপক্ষ জানে। মালিকপক্ষের নির্দেশ পেলে আমরা অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করব।’
পটুয়াখালীগামী এমভি সুন্দরবন-১২ লঞ্চের কর্মচারী সাদেক হোসেন বলেন, যাঁরা নিয়মিত লঞ্চে যাতায়াত করেন, তাঁরাই অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করে থাকেন। অগ্রিম টিকিটের বেশির ভাগ নিয়মিত যাত্রীরা নিয়ে থাকেন। তিনি আরও বলেন, অগ্রিম টিকিট বিক্রির বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ঘোষণা আসেনি। কয়েক দিনের মধ্যে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হতে পারে। তবে এবার ঈদ মৌসুমে অগ্রিম টিকিটের চাহিদা কম।
অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাপ) সংস্থার ঢাকা নদীবন্দরের আহ্বায়ক ও এমভি অভিযান লঞ্চের মালিক মামুন অর রশিদ বলেন, ‘যেদিন গার্মেন্টস ছুটি হবে, সেদিন থেকে বিশেষ লঞ্চ চলাচল শুরু করবে। এ ব্যাপারে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। সাধারণত যেসব যাত্রীরা নিয়মিত যাতায়াত করেন, তাঁরাই অনলাইন ও মুঠোফোনের মাধ্যমে আগাম টিকিট বুকিং দিয়ে থাকেন। এ ছাড়া নৌপথে যাত্রী কমে যাওয়ায় অগ্রিম টিকিটের জন্য যাত্রীদের আগ্রহ কম।’ তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে টার্মিনালে আগের মতো যাত্রীদের চাপ পড়ে না। তবে যাত্রী বহনে পর্যাপ্ত লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৩ জুন থেকে বিশেষ লঞ্চ চলাচলের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে যাত্রীদের উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে বিশেষ লঞ্চ চলাচল করবে। তিনি আরও বলেন, যাত্রীবাহী নৌযানের নিরাপদ ও হয়রানিমুক্ত চলাচল নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।