শক্তিশালী ও দক্ষ আর্থিক ব্যবস্থাপনা তৈরিতে সহায়তা করার জন্য পরিকল্পনাবিদ, শিক্ষাবিদ ও উন্নয়ন সহযোগীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। আজ রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা কৌশল (পাবলিক ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট বা পিএফএম) ২০২৫-২০৩০ তৈরির প্রক্রিয়া উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
বিশ্বব্যাংক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সহায়তায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা ও টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির সুদূরপ্রসারী প্রভাবগুলো আমরা মোকাবিলা করছি। এটি পর্যায়ক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য সময়োপযোগী ও কার্যকর আর্থিক ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য।’
অর্থ বিভাগের সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর বার্নাড হেভেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সিরাজুন নূর চৌধুরী। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি (হেড অব কো-অপারেশন) মিকাল ক্রেজান, কানাডীয় হাইকমিশনের করপোরেট উন্নয়ন সহায়তা প্রধান জো গুডিংস এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার জ্যেষ্ঠ উন্নয়ন উপদেষ্টা সিলভিয়া ইসলাম। অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব আবু দাইয়ান মোহম্মদ আহসানউল্লাহ ‘পাথওয়ে টু পিএফএম রিফর্ম স্ট্র্যাটেজি ২০২৫-২০৩০’ (পিএফএম কৌশল সংস্কারের পথ) শিরোনামে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপনা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে অর্থ বিভাগের সচিব মো. খায়েরুজ্জামান বলেন, কার্যকর সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং সুশাসন প্রচারের লক্ষ্যে সংস্কারের একটি মৌলিক দিক থেকে পিএফএম সংস্কার করা হয়েছে। বাংলাদেশে পিএফএম সংস্কারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হলেও এর থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার জন্য অংশীদারদের কাছ থেকে আরও সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর বার্নাড হেভেন বলেন, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। সমন্বিত বাজেট এবং অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম, ই-প্রকিউরমেন্ট এবং স্বয়ংক্রিয় অর্থ প্রদানের মতো সিস্টেমগুলোকে দারুণ অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন তিনি। উদ্বোধনী অধিবেশনের পর দুটি কারিগরি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
জনসম্পদকে কার্যকরভাবে পরিচালনা, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, জবাবদিহি নিশ্চিত করতে এবং টেকসই উন্নয়ন সমুন্নত করার লক্ষ্যে এর আগে ২০০৭ থেকে ২০১৩ এবং ২০১৬ থেকে ২০২১ মেয়াদে দুটি পিএফএম কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পিএফএম কৌশল ২০২৫-২০৩০ এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে এর আগে বাস্তবায়িত পিএফএম কৌশলগুলোতে যেসব সীমাবদ্ধতা ছিল, তা ঠিক করা এবং স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট নাগরিক তৈরির রাজনৈতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখা।