চট্টগ্রাম-১০ আসনে উপনির্বাচন

গোপন কক্ষে নৌকার কেন্দ্র সচিব, বললেন ‘দেখিয়ে দিলে ভোট দ্রুত হয়’

নৌকার কেন্দ্র সচিব দাবি করা খোকন দেবনাথ (মাঝে)। দক্ষিণ কাট্টলী ফজলুল হাজেরা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের ৩ নম্বর ভোটকক্ষ। বেলা সোয়া ১১টার দিকে। চট্টগ্রাম, ৩০ জুলাই
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে দক্ষিণ কাট্টলী ফজলুল হাজেরা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের ৩ নম্বর কক্ষের (পুরুষ) সামনে আজ রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ১০ থেকে ১২ ব্যক্তির জটলা দেখা যায়। সেখানে থাকা লোকজনের মধ্যে অন্তত পাঁচজনের বুকে নৌকা প্রতীকের ব্যাজ লাগানো ছিল।

একপর্যায়ে এক ভোটারের সঙ্গে সেখানে থাকা দুই ব্যক্তিকে গোপন কক্ষে ঢুকে যেতে দেখা যায়। ভোটার গোপন কক্ষ থেকে বের হওয়ার পর নৌকা প্রতীকের ব্যাজ পরা এক ব্যক্তি পোলিং এজেন্টের উদ্দেশে বলেন, ‘দেখিয়ে দিলে ভোট দ্রুত হয়।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা নৌকা প্রতীকের ব্যাজ পরা এই ব্যক্তির পরিচয় জানতে চান। তিনি বলেন, ‘আমি নৌকার কেন্দ্র সচিব। আমার নাম খোকন দেবনাথ। মেশিন (ইভিএম) ডিস্টার্ব (গোলমাল) করছে। তাই দেখিয়ে দিচ্ছিলাম।’

দক্ষিণ কাট্টলী ফজলুল হাজেরা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের ৩ নম্বর ভোটকক্ষ। চট্টগ্রাম, ৩০ জুলাই

এই ব্যক্তির বুকে লাগানো নৌকা প্রতীকের ব্যাজেও একই নাম দেখা গেছে। ভোটারের সঙ্গে গোপন কক্ষে কেন ঢুকেছেন, সাংবাদিকেরা এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘অনেকে জানে না, কীভাবে ভোট দেবে। আর মেশিনের ডিস্টার্বের কারণে লোকজন এসে দাঁড়িয়ে আছে। তাই দেখিয়ে দিচ্ছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যাপারটা আমি দেখছি। এ রকম তো হওয়ার কথা নয়। গোপন কক্ষে কেউ ঢুকতে পারবেন না।’

চট্টগ্রাম-১০ (পাহাড়তলী-ডবলমুরিং-হালিশহর-পাঁচলাইশ) আসনের উপনির্বাচনে আজ সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। সব কটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে।

উপনির্বাচনে মোট কেন্দ্র ১৫৬টি। ভোটকক্ষ ১ হাজার ২৫১টি। উপনির্বাচনে মোট প্রার্থী ছয়জন।

দক্ষিণ কাট্টলী ফজলুল হাজেরা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের ৩ নম্বর ভোটকক্ষে নৌকার কেন্দ্র সচিব দাবি করা খোকন দেবনাথ (মাঝে) ও অন্যরা। বেলা সোয়া ১১টার দিকে। চট্টগ্রাম, ৩০ জুলাই

উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর সঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সামশুল আলমের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উপনির্বাচনের অপর প্রার্থীরা হলেন তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত (সোনালি আঁশ), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রশীদ মিয়া (ছড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আরমান আলী (বেলুন) ও মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া (রকেট)।

আসনটির সংসদ সদস্য ছিলেন আওয়ামী লীগের আফছারুল আমীন। গত ২ জুন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে আসনটিকে শূন্য ঘোষণা করা হয়। গত ৮ জুন এই আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।