সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত তাঁরা বিক্ষোভ করেন। হাজারো মানুষের উপস্থিতির কারণে এ সময় এই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ সচেতন সনাতনী নাগরিকের ব্যানারে ওই বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। বিক্ষোভের আগে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাঁরা মানববন্ধন করেন। বেলা তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত এই মানববন্ধন চলে। মানববন্ধন শেষে প্রেসক্লাব থেকে মিছিল নিয়ে মৎস্য ভবন হয়ে শাহবাগে আসেন তাঁরা।
দেশের অধিকাংশ জেলার বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের মন্দির ও বাড়িঘরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও হিন্দু মা–বোন–ভাইদের নির্যাতন এবং হত্যার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় সচেতন সনাতনী নাগরিক। তাতে অভিযোগ করা হয়, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়। সনাতন সম্প্রদায়ের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করা, হিন্দু মা–বোনদের লাঞ্ছিত করা এবং দেশছাড়া করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে।
সচেতন সনাতনী নাগরিকের পক্ষ থেকে মানববন্ধনে ১৯ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সুষ্ঠু বিচারের জন্য সনাতন সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়া ও পুনর্বাসন করা, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা প্রভৃতি।
শাহবাগের সমাবেশে আন্দোলনকারীরা নানা ধরনের স্লোগান দেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘আমার বাড়িতে হামলা কেন, জবাব চাই জবাব চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, জাস্টিস জাস্টিস’, ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জাগো জাগো হিন্দু জাগো’ ইত্যাদি।
আন্দোলনকারীরা নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড নিয়ে আসেন। সেসব প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘হিন্দুস হ্যাভ রাইট টু লিভ’, সেভ হিন্দুস’, ‘আমারও তো রক্ত লাল, সইবো আর কত কাল’, ‘পটপরিবর্তনে হিন্দুরা কেন ট্রাম্প কার্ড’ প্রভৃতি।
সচেতন সনাতনী নাগরিকের সভাপতি প্রসেনজীৎ কুমার হালদার প্রথম আলোকে বলেন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে আগামীকাল শনিবার বিকেলেও শাহবাগে তাঁদের কর্মসূচি রয়েছে।