গাজীপুরের জয়দেবপুরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষের পর থেকে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গ ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকায় চলাচলকারী ট্রেনের সূচিতে বিপর্যয় ঘটেছে। বেশির ভাগ ট্রেন এক থেকে তিন ঘণ্টা বা তারও বেশি দেরিতে চলাচল করছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা।
গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে জয়দেবপুর স্টেশনের কাছে তেলবাহী ট্রেনের সঙ্গে টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একটি লাইন চালু করলে সূচি বিপর্যয় এড়ানো যাচ্ছে না।
রেলওয়ে সূত্র বলেছে, আজ শনিবার সকাল থেকে ঢাকা, উত্তরবঙ্গ ও ময়মনসিংহের পথে ১২টি ট্রেন দেরিতে চলাচল করেছে। এর মধ্যে রংপুর এক্সপ্রেস, রাজশাহী রুটের সিল্ক সিটি ও বনলতা, জামালপুর রুটের অগ্নিবিনা ও ময়মনসিংহ রুটের বলাকা ট্রেন সবচেয়ে বেশি দেরিতে ছেড়েছে। সকাল থেকে কমলাপুর স্টেশনে শত শত যাত্রী ট্রেনের অপেক্ষায় ছিলেন বলে রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, একটি লাইন দিয়ে ট্রেন চলার কারণে জয়দেবপুর ও ধীরাশ্রম স্টেশনে আসা-যাওয়ার ট্রেনগুলোতে অপেক্ষায় রেখে একটি একটি করে চলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে দুর্ঘটনাস্থল পার করতে প্রতিটি ট্রেনের এক থেকে দেড় ঘণ্টা বেশি সময় লেগেছে।
বেশি গরমের কারণে গত ১৬ এপ্রিল থেকে ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। গরমে লাইন বেঁকে যেতে পারে—এই আশঙ্কা থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ কারণেও ট্রেনের স্বাভাবিক চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। সব মিলিয়ে সূচি বিপর্যয় হয়েছে।
রেলের কর্মকর্তারা বলেছেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেন লাইন থেকে সরানো হয়েছে। এরপর ওই লাইন ঠিকঠাক করার কাজ চলছে।
রেলের ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিএআরএম) সফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এক লাইন দিয়ে আসা-যাওয়ার ট্রেন পরিচালনা করার কারণে উত্তরের পথে সময়সূচিতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। বিকেলে নাগাদ ঠিক হয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে জয়দেবপুর জংশনের দক্ষিণে ছোট দেওড়া আউটার সিগন্যালে তেল ও যাত্রীবাহী দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে এক ট্রেনের দুই চালকসহ চারজন আহত ও নয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় সংকেতস্থলের (সিগন্যাল পয়েন্ট) দায়িত্বে থাকা স্টেশন মাস্টারসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ঢাকামুখী যাত্রীবাহী ট্রেনটি প্রায় যাত্রীশূন্য ছিল। নয়তো ঘটনা আরও ভয়ানক হতে পারত।