হোটেলে ঢুকে পাঁচজনকে পেটাল ছাত্রলীগ

মারধরের শিকার হোটেল সৈকতের উপসহকারী প্রকৌশলী সম্পদ রায়
 ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম নগরের রেলস্টেশন এলাকায় অবস্থিত হোটেল সৈকতের পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। আজ সোমবার বেলা দুইটার দিকে হোটেলের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। বাইরের একটি রেস্তোরাঁ থেকে খাবার নিয়ে এসে হোটেল সৈকতে বসে খাওয়াকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়।

মারধরের ঘটনায় নেতৃত্ব দেন সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি তন্ময় দাশগুপ্ত। এ সময় হোটেলটিতে কলেজটির প্রায় ১০০ নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

মারধরে আহত ব্যক্তিরা হলেন হোটেলের নিরাপত্তাকর্মী আবদুল গফুর, উপসহকারী প্রকৌশলী সম্পদ রায়, নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান, রুম বয় আবদুর রাজ্জাক ও অভ্যর্থনাকর্মী মিজানুর রহমান। তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া হোটেলের ব্যবস্থাপক মো. সরোয়ার উদ্দিনকেও লাঞ্ছিত করেন তাঁরা।

হোটেল কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেলা পৌনে দুইটার দিকে তন্ময় দাশের নেতৃত্বে প্রায় ১০০ জনের একটি দল হোটেলে যায়। এ সময় তারা বাইরে থেকে খাবার নিয়ে গিয়ে হোটেলের রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়ার চেষ্টা করে।

হোটেলের ব্যবস্থাপক মো. সরোয়ার উদ্দিন তাদের জানান, রেস্তোরাঁয় বাইরের খাবার খাওয়ার নিয়ম নেই। ন্যূনতম একটা খরচ দিলে হোটেলের মিলনায়তনে তিনি ব্যবস্থা করে দেবেন। অনুমতি না পাওয়ার পরও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হোটেলের রেস্তোরাঁ কর্ণফুলীতে ঢুকে পড়েন। এ সময় রেস্তোরাঁর এক কর্মীর সঙ্গে তাঁদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে তাঁকে মারধর শুরু করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এগিয়ে এলে তাঁদের মধ্যেও কয়েকজনকে মারধর করা হয়।

তবে এ ঘটনায় হোটেল কর্তৃপক্ষ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। বিষয়টি আলকরণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুস সালামকে মুঠোফোনে জানানো হয়। তিনি এসে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ঝামেলা করতে নিষেধ করে চলে যান। তাঁকে ফোন দেওয়ায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে আবারও হোটেলের কয়েকজনকে মারধর করেন।

জানতে চাইলে হোটেল সৈকতের ব্যবস্থাপক মো. সরোয়ার উদ্দিন বলেন, ‘এটা অভ্যন্তরীণ বিষয়। এটি নিয়ে কিছু বলতে পারব না। আমি চুপচাপ আছি। যা হওয়ার হয়ে গেছে।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে তন্ময় দাশগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ওখানে খেতে গিয়েছিলাম। বাইরের খাবার এনে খেয়েছি। এ সময় একটা বয় আমাদের একজন ছাত্রনেতার শার্টের কলার ধরে ফেলেন। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটি হয়। কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।’