ধানসিড়ি নদীতে ভরাট ও নির্মাণকাজ যেন না হয়, নিশ্চিত করার নির্দেশ

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

ঝালকাঠির রাজাপুরে ধানসিড়ি নদীতে আর যাতে মাটিভরাট ও নির্মাণকাজ না করা হয়, সেটি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরিবেশসচিব, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকারসচিব, পরিবেশ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ রোববার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে ৩০ দিনের মধ্যে নদীটির সীমানা জরিপ (সিএস ও আরএস অনুসারে) করে অবৈধ দখলদারদের তালিকা আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক ও রাজাপুরের সহকারী কমিশনারের (ভূমি) প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কবি জীবনানন্দ দাশের স্মৃতিবিজড়িত ধানসিড়ি নদী। মূল প্রশস্ততা কমিয়ে নালার মতো করে এটি খনন করার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে ২৫ অক্টোবর রিটটি করা হয়।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ধানসিড়ি নদীর প্রস্থ কমিয়ে খননের ব্যবস্থা করে দেওয়ার মাধ্যমে অবৈধ দখলদারদের সুযোগ করে দিয়েছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, জলাধার সংরক্ষণ আইন, সংবিধান ও সরকারি নীতির পরিপন্থী; যে কারণে নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।

ধানসিড়ি নদী নালার মতো করে খননের নির্দেশদাতাদের তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করতে ও তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রুলে এ নদীর দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না ও অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রকৃত সীমানা অনুসারে নদীটি খননের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

পরিবেশসচিব, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকারসচিব, পরিবেশ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, রাজাপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ প্রথম আলোকে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ধানসিড়ি নদীর প্রস্থ কমিয়ে খননের ব্যবস্থা করে দেওয়ার মাধ্যমে অবৈধ দখলদারদের সুযোগ করে দিয়েছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, জলাধার সংরক্ষণ আইন, সংবিধান ও সরকারি নীতির পরিপন্থী; যে কারণে নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।