চার বছর আগে করোনার নমুনা পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার সেই মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। গতকাল বুধবার কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।
মো. সাহেদের আইনজীবী দবির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, অস্ত্র মামলায় সাহেদ করিম আপিল বিভাগ থেকে সম্প্রতি জামিন পান। গতকাল তিনি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েছেন। সাহেদের বিরুদ্ধে বর্তমানে ৩৫টি মামলা চলমান রয়েছে। তবে সব কটিতেই তিনি জামিনে আছেন।
২০২০ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালান র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ভ্রাম্যমাণ আদালত। হাসপাতাল থেকে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে সাহেদসহ ১৭ জনের নামে করোনার সনদ জালিয়াতির অভিযোগে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করে। মামলার ৯ দিনের মাথায় ১৫ জুলাই সাহেদকে সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর তাঁকে নিয়ে উত্তরায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করে সংস্থাটি। এ নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় র্যাব অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে ওই মামলা করে।
পরে সাহেদের বিরুদ্ধে নানা প্রতারণার অভিযোগে একাধিক মামলা হয়। ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনের মামলায় সাহেদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই সাজার রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি হাইকোর্ট আপিল মঞ্জুর করে তাঁকে খালাস পান সাহেদ। তবে গত ১৪ জানুয়ারি হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
অপর দিকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের একই মামলায় গত বছরের ২১ আগস্ট সাহেদকে তিন বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। আর ১৪ বছর আগে ২০১০ সালে চেক জালিয়াতির একটি মামলায় তাঁর ছয় মাসের সাজা হয়। একই সঙ্গে তাঁকে ৫৩ লাখ টাকা জরিমানাও করেছিলেন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ।
সাহেদের বিরুদ্ধে ৩৫টি মামলার মধ্যে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনেও একটি মামলা রয়েছে। সেই মামলায় সিআইডির প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, আসামি সাহেদ মানুষ ঠকিয়ে ১১ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছিলেন। রিজেন্ট হাসপাতালে পরীক্ষা না করেই ভুয়া সনদ দিয়ে তিনি ৩ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার ২২৭ টাকা হাতিয়ে নেন। এর বাইরে তাঁর অন্যান্য প্রতারণা ছিল অভিনব।