ফলকার টুর্ক
ফলকার টুর্ক

বিক্ষোভ দমনে কী কী ঘটেছে, তার বিস্তারিত প্রকাশ করুন: জাতিসংঘের মানবাধিকারপ্রধান

বাংলাদেশে বিক্ষোভ দমনে কী কী ঘটেছে, তার বিস্তারিত তথ্য জরুরিভাবে প্রকাশ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব অভিযান যেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক রীতিনীতি ও মানদণ্ড মেনে হয়, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফলকার টুর্ক বলেছেন, সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে দেখা যাচ্ছে যে সরকারি নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও তরুণদের আন্দোলনের জেরে ১৭০ জনের বেশি নিহত এবং ১ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের কাউকে কাউকে চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি। এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। অন্তত দুজন সাংবাদিক নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিরোধী দলের সদস্যসহ কয়েক শ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বলেছেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে অনেক মানুষ সরকারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গ্রুপের সহিংস হামলার শিকার হয়েছেন। তাঁদের রক্ষায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং এই সহিংসতার পেছনের কারণ নিয়ে সংলাপের পরিবেশ তৈরি করার জন্য আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব অভিযান বিশেষ করে সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ (শক্তিপ্রয়োগসহ) যেন মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও মানদণ্ড মেনে পরিচালিত হয়।’

সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক আইন মেনে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমসহ সবার জন্য পরিপূর্ণভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ এবং স্বাধীনভাবে যোগাযোগ করতে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ফলকার টুর্ক। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ সময়ের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ রাখার মতো পদক্ষেপগুলোতে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন, জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রতি সম্মান জানানোর রাষ্ট্রের বাধ্যবাধকতা প্রতিপালন ব্যাহত হয়। পাশাপাশি এতে নাগরিকদের সমবেত হওয়া ও চলাচল, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতাসহ নানা স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয়।’

বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগ উঠেছে তার সবগুলোর নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত চেয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার। এই প্রক্রিয়ায় তাঁর দপ্তরের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ারও প্রস্তাব করেছেন তিনি।